দুদকের রিমান্ডে মোহামেডানের লোকমান

লোকমান ভূঁইয়া। ছবি: বিসিবি ওয়েবসাইট
লোকমান ভূঁইয়া। ছবি: বিসিবি ওয়েবসাইট

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে সাত দিনের রিমান্ডে এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, আজ সকালে কাশিমপুর কারাগার থেকে অন্য একটি মামলার শুনানির জন্য লোকমানকে আদালতে আনা হয়। পরে আদালতের আদেশ নিয়ে তাঁকে বিকেলে দুদকে এনে এক ঘণ্টার মতো জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের একটি দল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে রাজধানীর রমনা থানার হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। কাল মঙ্গলবার সকালে আবার তাঁকে দুদকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দিন লোকমানকে প্রাথমিক কিছু তথ্য নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের হাতে থাকা ওই সব তথ্য লোকমানের কাছ থেকে যাচাই করে নেওয়া হয় বলে দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে।

৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর লোকমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ নভেম্বর লোকমান ভূঁইয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েস।

দুদকের অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনো থেকে দিনে ৭০ হাজার করে মাসে ২১ লাখ টাকা নিতেন। মোহামেডান ক্লাবের ওই ক্যাসিনো চালাতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। ক্লাবটিতে ক্যাসিনো ব্যবসার ভাড়া বাবদ লোকমান ওই টাকা নিতেন।

দুদকের অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, লোকমান ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে পাওয়া ৪১ কোটি টাকা অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড এবং কমনওয়েলথ ব্যাংকে রাখেন।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া তাঁর আয়কর নথিতে নিজ নামে অর্জিত ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি নিজ নামে এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন ব্যাংকে ২ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৪ টাকা জমা রেখেছেন। এ অর্থ আয়ের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে তাঁর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরুর দিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে লোকমানকে রাজধানীর মণিপুরি পাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর বাসা থেকে চার বোতল বিদেশি মদ জব্দ করে র‌্যাব। এ ঘটনায় পুলিশের পরিদর্শক জাহিদুর রহমান তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। এরপর কয়েক দফা লোকমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

লোকমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।