জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নিয়ে যা বললেন পাঠক

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের সদস্যরা। প্রথম আলো
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের সদস্যরা। প্রথম আলো

গত ২০ মাসে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে সেবা পেতে ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭২৩ জন ফোন দিয়েছেন। এ বিষয়ে পাঠকদের অভিজ্ঞতা জানতে চেয়ে প্রথম আলো ফেসবুক পেজে আজ একটি পোস্ট করা হয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ৫ হাজার পাঠক পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানান। পাশাপাশি ৮০০ পাঠক তাদের অভিজ্ঞতা জানান। বেশির ভাগ মন্তব্যই ছিল ইতিবাচক।

আইনজীবী শফিকুল ইসলাম রনি নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘রামপুরায় আমরা যে বাসায় থাকি সে বাসায় হঠাৎ গ্যাস লিক হয়। তখন তিতাসে অনেক বার কল দিয়েও কোনো রেসপন্স না পেয়ে ৯৯৯ এ কল দিই। ৪০ / ৫০ মিনিটের মধ্য লোক এসে সমস্যার সমাধান করে দিয়ে যায়। ধন্যবাদ ৯৯৯ টিমকে।’

আবু বাকের সিদ্দিকি লিখেছেন, ‘আমি একবার আক্রান্ত হয়েছিলাম কিন্তু স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ আমাকে সহযোগিতা করছিল না। ৯৯৯ নম্বরে কল করার পর ওসিসহ অনেক পুলিশ সেখানে আসে এবং আমাকে সহযোগিতা করে।’

ফয়সাল হোসেইন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে গাড়ি ডাকাতির হাত রক্ষা পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।

ওমর ফারুক লিখেছেন, ‘বাসার পাশে উচ্চশব্দে গান বাজনা হচ্ছিল। ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে উপকার পেয়েছি। তাঁরা খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন আমার পরিচয় প্রকাশ না করেই।’

এইচ. এম. রিসাতও উপকৃত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

রাশেদুল আলম লিখেছেন, ‘আমি দুইবার কল দিয়েছিলাম এবং দুইবারই পুলিশের সহযোগিতায় প্রভাবশালী শত্রুপক্ষ থেকে আমার পরিবারের সদস্য এবং আমাদের বসতভিটা রক্ষা পেয়েছিল। এ জন্য ৯৯৯ নম্বরকে ধন্যবাদ।’

হক ইফরান জানিয়েছেন যে তিনি সমস্যার সমাধানতো পেয়েছেনই। পাশাপাশি তাঁকে দ্বিতীয়বার ফোন করে তাঁর খোঁজখবরও নেওয়া হয়েছিল।

মো. মমিন হোসেইন লিখেছেন, ‘আমি ২০১৮ সালে কল দিয়েছিলাম পুলিশি সেবার জন্য। কোনো আর্থিক লেনদেন ছাড়াই দ্রুত সময়ে সেবা পেয়েছি। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।’

এবাদুর রহমানের মতে, এ উদ্যোগের কথা এখনো সবাই জানে না। এর আরও প্রচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

নেতিবাচক মন্তব্যও ছিল বেশ কিছু। যেমন রুবায়া ইসলাম রুহি লিখেন, ‘ওখানে কল দিয়ে কাজের কাজ কিছু হয় না। যেখানে এক মুহূর্ত দেরি করার অবকাশ নেই, সেখানেও তাঁরা এর-ওর ফোন নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলে। এতজনের সঙ্গে কথা বলার সময় সুযোগ থাকলে নিশ্চয়ই আপনাদের ফোন দিতাম না।’

আফজাল সরকার লিখেছেন, ‘আমি কয়েকবার দিয়েছিলাম। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এই হেল্প ডেস্ক থেকে আমার আস্থা উঠে গেছে।’

শরিফুল ইসলাম লিখেছেন যে তিনি কল দিয়ে কোনো প্রতিকার পাননি। বারবার ফোন লাইন কেটে যায় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

সিফাত মির অ্যাম্বুলেন্স সেবা ছাড়া অন্য সব সেবায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন।

অয়োময় রনী লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগে দুর্ঘটনায় রাস্তায় পরে থাকা অজ্ঞাতনামা লোকের জন্য সেখানে ফোন দিয়েছিলাম। মাত্র ৩৪ মিনিটের মধ্যেই পুলিশের উদ্ধারকারী দল এসেছিল। এটা আমার ভালো লেগেছে।’

কয়েকজন পাঠকের আবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও তাঁরা বাকিদের মন্তব্য পড়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছেন।

জুয়েল বড়ুয়া লিখেছেন, ‘আমার ফোন দেওয়া হয়নি। তবে সবার প্রশংসা শুনেছি। মনে হয় এই উদ্যোগগুলো সরকার ও পুলিশের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়ক হবে।’

মোহাম্মাদ আব্দুল আলীম লিখেছেন, ‘সবার মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। সরকারকে ধন্যবাদ।’

মো. এমদাদুল হক এমদাদ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন. বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে লাইন বিজি রাখবেন না। এতে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হিমেল হিমু, ইনতিসার অর্ণব, সোহা সাজনিনসহ অনেকেই ৯৯৯ নম্বরে সেবা দানকারী কর্মীদের ব্যবহারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।