হোলি আর্টিজানে হামলা: তিন আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবার তিনজন আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেছেন ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান।

যে তিনজন আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে তাঁরা হলেন রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যান, আসলাম হোসেন র‍্যাশ এবং হাদিসুর রহমান সাগর। এ মামলার অভিযুক্ত আট আসামির অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ।

আজ বিচারকাজ চলার সময় আটজনই উপস্থিত ছিলেন।

তিন আসামির আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন আদালতের কাছে দাবি করেন, যে ছয়টা বাড়িতে আসামিরা হামলার ষড়যন্ত্রসহ নানা শলাপরামর্শ করেছিলেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সেসব বাড়ির কোনো স্কেচ ম্যাপ আঁকেননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিশেষ করে বসুন্ধরার যে বাসায় অবস্থান করে হামলাকারীরা ঘটনার দিন রওনা দিয়েছিলেন। হামলার আগে যেখানে আসামিরা অবস্থান করছিলেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সেই বাসার ও স্কেচম্যাপ করা হয়নি। জব্দ করা হয়নি ওই বাসার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও। ঢাকার অধিকাংশ বাসাতেই যারা আসেন, তাদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি রেজিস্টার খাতা থাকে। আসামিরা যেসব বাসায় অবস্থান করে ষড়যন্ত্র কিংবা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে, সেসব বাসার কোনো রেজিস্টার তদন্তকারী কর্মকর্তা জব্দ করেননি। জব্দ করা হয়নি ভাড়াটিয়া চুক্তির কাগজপত্র।

আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের কাছে আরও দাবি করেন, এই মামলার যেসব আসামি যারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাদের জবানবন্দির তথ্যে একে অপরকে সমর্থন করছে না।

আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন আদালতকে বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই। দোষী হলে সাজা হবে নির্দোষ খালাস হবে। অপরাধ উপস্থাপন আর অপরাধ প্রমাণ করার মধ্যেই অনেক পার্থক্য রয়েছে।

শুনানির একপর্যায়ে বিচারক আদালতে বলেন, আসামি রাকিবুল তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেছেন, তিনি খেলাফতকে সমর্থন করেন।
রাকিবুলের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন তখন আদালতের কাছে দাবি করেন, খেলাফতকে সমর্থন করলেও তাঁর মক্কেল হলি আর্টিজানের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। সাক্ষ্য-প্রমাণের যেকোনো সন্দেহের সুবিধা পাবে আসামিপক্ষ। আদালত শতভাগ নিশ্চিত হয়েই আসামিদের সাজার রায় দেন।

গত ৭ নভেম্বর হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আট জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড চেয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ।

হামলার আড়াই বছরের মাথায় গত বছরের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়।