শরীয়তপুরে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, বখাটের ইটের আঘাতে ভাঙল ছাত্রীর দাঁত

শরীয়তপুর
শরীয়তপুর

শরীয়তপুরে নিজের কলেজ ক্যাম্পাসে কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তারের ওপর হামলা চালিয়ে (১৯) পাঁচটি দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় আজমির উল্লাহ (১৮) ইট দিয়ে আঘাত করে ওই ছাত্রীর দাঁত ভেঙে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে গতকাল বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

খাদিজা ওই কলেজের স্নাতক শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি সদর উপজেলার চর কোয়ারপুর গ্রামের আবুল কালাম ঢালীর মেয়ে। আর আজমির একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার তুলাসার গ্রামের শাহ আলম খানের ছেলে। হামলার ঘটনায় খাদিজার বাবা বুধবার রাতে থানায় মামলা করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, আজমির দুই মাস ধরে খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। তিনি খাদিজাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রথম দিকে ওই ছাত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিতেন না। পরে একপর্যায়ে সহপাঠীদের মাধ্যমে আজমিরকে সতর্ক করেন খাদিজা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। গতকাল ক্লাস শেষে কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় খাদিজার পথরোধ করেন ওই তরুণ। এর প্রতিবাদ করেন খাদিজা। তখন তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আজমির ইট দিয়ে ওই ছাত্রীর মুখে আঘাত করেন। এতে তাঁর নিচের মাড়ির দুটি ও ওপরের মাড়ির তিনটি দাঁত ভেঙে যায়। পরে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ওই কলেজ ছাত্রীর পাঁচটি দাঁত ভেঙে গেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর মুখে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু সদর হাসপাতালের দন্ত বিভাগে এ ধরনের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদিজার এক সহপাঠী বলেন, ‘ছেলেটি আমাদের জুনিয়র। তাঁকে অনেকবার বারণ করেছিলাম। বোঝানোর চেষ্টা করেছি এ কাজ সঠিক নয়। কিন্তু সে বেপরোয়া ছিল। কারও কোনো কথা শোনেনি। আমরা বিষয়টি নিজেরা মোকাবিলা করতে চেয়েছিলাম। এ কারণে কলেজের শিক্ষকদের জানাতে চাইনি।’

খাদিজার বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘কলেজে একটি ছেলে উত্ত্যক্ত করত তা মেয়ে বাড়িতে দুই-একবার আলোচনা করেছে। কিন্তু আমরা বিষয়টি কখনো গুরুত্ব দিইনি। এর মূল্য এমনভাবে দিতে হবে বুঝতে পারিনি।’

শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত। তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আগামী শনিবার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক পরিষদের সভা ডেকেছি। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় আজমিরের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কোনো সদস্যকেও পাওয়া যায়নি। পালং মডেল থানার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বখাটে আজমির পালিয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।