'বানানো ইতিহাস দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না'

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ফাইল ছবি
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতিবিদেরা ইতিহাসবিদ হলে তৈরি হয় প্রোপাগান্ডা। তাঁরা তাঁদের মতো করে ইতিহাস সৃষ্টি করছেন। বানানো ইতিহাস বা দলীয় ইতিহাস বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বইপুস্তকে সঠিক ইতিহাস বের হয়ে এসেছে।

বিএনপির ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগর মহিলা দল আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে এই সভার আয়োজন করে।

চট্টগ্রাম নগর মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রোজী কবির, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমদ, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।

সভায় আমীর খসরু আরও বলেন, ‘শুধু একজন ব্যক্তির মাধ্যমে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছে, সেখানে রাজনীতিবিদের অবদান ছিল, লেখকের অবদান ছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধে কৃষকেরও অবদান থাকে। প্রতিটি স্বাধীনতাযুদ্ধে অনেক লোকের অবদান থাকে। যাঁদের অবদানে দেশ স্বাধীন হয়, তাঁদের বলা হয় ফাউন্ডিং ফাদার। বাংলাদেশে অন্যতম ফাউন্ডিং ফাদার হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। তাজউদ্দীন সাহেবও ফাউন্ডিং ফাদার ছিলেন। এটা অস্বীকার করব না। আরও অনেক ফাউন্ডিং ফাদার ছিলেন।’

আমীর খসরু বলেন, ৭ নভেম্বরের কারণে বাংলাদেশ অস্থিরতা থেকে রক্ষা পেয়েছিল। এই দেশ একদলীয় অবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে গিয়েছিল। গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরে এসেছিল। বাংলাদেশের মানুষ বাক্‌স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করত সরকার। কারা পারমিট পাবে, কারা ব্যবসা করবে, কারা কারখানা করবে—সবই ছিল নিয়ন্ত্রিত। তবে এই নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি মুক্ত অর্থনীতি বা ব্যবসা-বাণিজ্য চালু করেছিলেন। তিনি শক্তিশালী অর্থনীতি তৈরি করেছিলেন। এ কারণেই দেশ আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে।

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘পেঁয়াজ রান্নার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এখন কেউ যদি বলে আপনারা পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করেন। এটি কি মশকরা নয়? এখন কাল যদি ডিমের দাম বেড়ে যায়, তখন বলবে, ডিম খাবেন না। কে বলতে পারে এই কথা? আসলে জনগণের কাছে যার কোনো জবাবদিহি নেই, সেই অনির্বাচিত সরকার, যে সরকারের জনগণের কাছে ভোট চাইতে হয় না, সেই সরকার এই মশকরা করতে পারে।’

আমীর খসরু বলেন, এই সরকার ক্যাসিনো শিখিয়ে গেছে। আবার অভিযান দেখাচ্ছে। এরা হচ্ছে মাফিয়া। সরকারের সমর্থন নিয়ে এসব কাজ করছে। তাই কিসের অভিযান? মাফিয়াদের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে গন্ডগোল হয়, জায়গাজমি নিয়ে গন্ডগোল হয়। তখন একজন আরেকজনকে গুলি করে ফেলে দেয়। এখন অভিযান যারা চালাচ্ছে তারাই তো মাফিয়া। এটা হচ্ছে দখলদারি ও সীমানা রক্ষার্থের অভিযান।

কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘আমরা আজকে একত্র হয়েছি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। জিয়া যুদ্ধ করে যে দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে দেশের মালিকানা এখন জনগণের হাতে নেই। মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে আজ বেগম খালেদা জিয়া জেলে। এই সরকারের কোনো ক্ষমতা নেই বেগম খালেদা জিয়াকে মোকাবিলা করার। বিএনপি ফুলে-ফলে সুশোভিত একটি বটবৃক্ষ। সে জন্য আওয়ামী লীগ ঢিল মারছে।’