'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা মাদক পাচারকারী নিহত: বিজিবি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মিয়ানমারের এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। বিজিবি বলছে, নিহত ব্যক্তি মাদক পাচারকারী ছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদীর লেদাছ্যুরি খালের কেওড়া বাগানে এই ঘটনা ঘটে। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।

বিজিবি বলেছে, নিহত ব্যক্তির নাম নূর কবির (২৮)। তাঁর বাড়ি মিয়ানমারের মংডু শহরের সিকদারপাড়া এলাকায়। বাবার নাম মোহাম্মদ মতলব। 


বিজিবির ভাষ্য, বন্দুকযুদ্ধের স্থান থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দেশে তৈরি ১টি বন্দুক (এলজি), ২টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় বিজিবির দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

ফয়সল হাসান খান বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল রাতে বিজিবির লেদা সীমান্ত চৌকির একটি বিশেষ টহলদল নাফ নদীর লেদাছ্যুরি খালের পাশের বেড়িবাঁধ এলাকায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় কেওড়া বাগানে ৩ থেকে ৪ জন লোককে মাটি খুঁড়তে দেখা যায়। তাঁরা কালো পলিথিনে মোড়ানো একটি বস্তা মাটির নিচ থেকে বের করছিলেন। তাঁরা আচমকা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির দুই সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে ৮ থেকে ১০ মিনিট গোলাগুলি হয়। একপর্যায়ে ইয়াবা পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরে বিজিবির টহলদলের সদস্যরা ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা বড়ি, অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির পকেটে একটি পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। তা থেকে তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়। পরে তাঁকে ও বিজিবির আহত সদস্যদের উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানের দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, রাতে বিজিবি একজন সাধারণ ব্যক্তি ও বিজিবির দুজন সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বিজিবির সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর ও মোহাম্মদ আল মাসুদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর গুলিবিদ্ধ নূর কবিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার পাঠানো হয়। তাঁর শরীরে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক বলেন, গুলিবিদ্ধ ইয়াবা পাচারকারীকে রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত হবে। কোনো আত্মীয়স্বজন পাওয়া না গেলে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হবে।

গত বছরের ৪ মে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবির সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ এবং ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ‘অন্তর্কোন্দলের’ জেরে কক্সবাজার জেলায় ৩ নারীসহ ১৮৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে দুই নারীসহ ৪৯ জন রোহিঙ্গা।