ধান কাটার অন্যরকম উৎসব
নারী ও পুরুষের ধান কাটার প্রতিযোগিতা, কৃষি নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব। এরপর পুরস্কার বিতরণ আর রাজবংশী সম্প্রদায়ের নাচ–গানের আয়োজন। এই পুরো কর্মযজ্ঞের নাম দেওয়া হয়েছে ধান কাটার উৎসব।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে এ উৎসবের আয়োজন করেন মনিরুজ্জামান নামের এক চাষি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান।
চাষি মনিরুজ্জামানের বাড়ি রাজশাহী নগরের মহিষবাথান এলাকায়। তাঁর নিজের আবাদি জমি নেই। অন্যের জমি ইজারা নিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে একের পর এক নতুন ফসল চাষ করেছেন। গোদাগাড়ীর এ অঞ্চলে আগে শুধু ধানের চাষ হতো। মনিরুজ্জামান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ এলাকার জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো, হলুদ, তরমুজসহ প্রায় ১০ জাতের নতুন ফসল চাষের প্রচলন শুরু করেছেন। তাঁর দেখাদেখি নতুন ফসলের চাষ শুরু করেছেন অন্যরাও।
গতকাল বিকেলে চৈতন্যপুর গ্রামের একটি ধানখেতের পাশে ওই উৎসবের আয়োজন করা হয়। খোলা মাঠে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়। মাঠের চারদিক সাজানো হয় রঙিন কাগজে। তিনটি করে পুরুষ ও নারী দল ধান কাটার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেতের নির্ধারিত একটি অংশের ধান কাটতে হয় প্রতিযোগীদের। বিজয়ী নারীদের নতুন শাড়ি আর পুরুষদের দেওয়া হয় লুঙ্গি।
প্রতিযোগিতা শেষে গ্রামের রাজবংশী সম্প্রদায়ের নারী ও পুরুষেরা মাদলের তালে নেচে–গেয়ে মাতিয়ে তোলেন উৎসব প্রাঙ্গণ।
এর আগে উৎসবের শুরুতে এক গোছা ধান কেটে কৃষক মনিরুজ্জামানের হাতে তুলে দেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে ধান কাটার উৎসব হারিয়ে যাচ্ছিল। ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে চৈতন্যপুর গ্রামে আবার এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।