নওগাঁয় ৮ হাজার আমগাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা

কেটে ফেলা আমগাছ। গতকাল দুপুরে পোরশা উপজেলার গুন্ধইল মাঠে।  ছবি: প্রথম আলো
কেটে ফেলা আমগাছ। গতকাল দুপুরে পোরশা উপজেলার গুন্ধইল মাঠে। ছবি: প্রথম আলো

গবাদিপশু ও স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমের বাগান গড়ে তুলেছিলেন জামালপুর গ্রামের ফটিক বর্মণ। প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে বালতি ও কলসে করে পানি এনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী অনেক কষ্টে বাগানের গাছগুলো গত এক বছর ধরে পরিচর্যা করেছেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন বাগানের ফল বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার। কিন্তু রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হয়েছে তাঁর ৮৭০টি গাছ।

শুধু ফটিক বর্মণ নন, তাঁর মতো আরও ১১ জন আমচাষির স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে শত্রুতার কোপে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতেসাপাহার উপজেলার তিলনা ইউনিয়নের জামালপুর ও পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের গুন্ধইল মাঠে ৬০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা ১২ জন বাগানমালিকের প্রায় ৮ হাজার গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে তাঁদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছগুলোর বয়স এক বছর থেকে চার বছর পর্যন্ত। কারা, কী শত্রুতায় একাধিক মালিকের এতগুলো গাছ কেটে ফেলল, তা এখন পর্যন্ত উদ্‌ঘাটন করতে পারেননি বাগানমালিক ও স্থানীয় প্রশাসন।

খবর পেয়ে গত বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাপাহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী ও সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাপাহার ও পোরশা থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি ক্ষতিগ্রস্ত বাগানমালিকেরা। ক্ষতিগ্রস্ত বাগানমালিকেরা বলেন, তাঁদের সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। এ ছাড়া যেসব জমি বর্গা নিয়ে তাঁরা বাগান করেছেন,  এ  জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। কারা, কী শত্রুতায় তাঁদের এত বড় ক্ষতি করল, তা বুঝতে পারছেন না।

সাপাহার উপজেলার দোয়াশ গ্রামের রায়হান ইসলাম বলেন, তাঁর ১৮ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা ৩ হাজার ৩০০টি গাছ কেটে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তাঁর গাছগুলোর বয়স প্রায় ১১ মাস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম,  পোরশা ও সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক সহায়তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।