বগুড়া থেকে সব সড়কপথে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ

বগুড়া থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকনেতারা । আজ শনিবার দুপুর ১২ টায় বগুড়া চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার চিত্র এমন। ছবি: সোয়েল রানা
বগুড়া থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকনেতারা । আজ শনিবার দুপুর ১২ টায় বগুড়া চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার চিত্র এমন। ছবি: সোয়েল রানা

নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে বগুড়া থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব সড়কপথে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা এই বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। এ ব্যাপারে আগে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

হঠাৎ ঘোষিত এ কর্মসূচির ফলে বগুড়া থেকে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ছাড়াও বগুড়া-জয়পুরহাট, বগুড়া-রংপুর, বগুড়া-নওগাঁ, বগুড়া-গাইবান্ধা, বগুড়া-দিনাজপুর, বগুড়া-নাটোর, বগুড়া-রাজশাহী, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ-নগরবাড়ি, বগুড়া -ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল এবং উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের সড়কপথে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়াই আকস্মিক বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

বগুড়ার চারমাথার মোড়ে ভুক্তভোগী কয়েক ব্যক্তি বলেন, সকালে বিভিন্ন জেলা থেকে বাস ছেড়ে এলেও বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা বাস চলাচলে বাধা দেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কিছু বাস আটক করে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে টার্মিনালে আটকে রাখেন। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

সকাল ১০টায় জয়পুরহাটের বাস ধরতে আসা জনি তালুকদার বলেন, ‘জয়পুরহাট থেকে যাত্রী নিয়ে আসা একটি বাস যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরতে ট্রিপে যাত্রী তোলা শুরু করলে একদল শ্রমিক এসে বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসটি আটক করে টার্মিনালে ঢুকিয়ে দেন। এখন বাস না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও এই কদিন সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত ছিল প্রশাসন। ফলে দুই সপ্তাহ শিথিল ছিল নতুন আইনের কার্যকারিতা। আজ থেকে আইন কার্যকর হতে পারে, এমন আশঙ্কায় শ্রমিকেরা অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছেন।

ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন, বগুড়ার মালিকদের বেশির ভাগ বাসই ফিটনেসবিহীন। প্রশাসনের অভিযান ঠেকাতে গাড়ি বন্ধ রাখার কৌশল নিয়েছেন শ্রমিকেরা।

জানতে চাইলে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি শাহ আখতারুজ্জান বলেন, শ্রমিকদের ধর্মঘট সম্পর্কে কিছুই জানা নেই। মালিকদের সঙ্গে এ নিয়ে আগে কোনো আলোচনা হয়নি।

বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কামরুল মোর্শেদ বলেন, জোর করে কোনো গাড়ি বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। প্রশাসনের অভিযানের শঙ্কায় মালিকেরা নিজে থেকেই ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।

বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই-১) রেজাউল করিম বলেন, পূর্ব আলোচনা ছাড়াই শ্রমিকেরা শনিবার সকাল থেকে আকস্মিক অধিকাংশ রুটে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।