মাছটির ওজন ৭ মণ
শনিবার বেলা সোয়া একটা। মেঘনার ভৈরব ও নবীনগর মোহনার মাঝামাঝি জায়গায় জাল ফেলেছেন জেলেরা। অনেক চেষ্টা করেও জাল টেনে তুলতে পারছিলেন না তাঁরা। ধারণা করেছিলেন, গাছের কোনো বড় ডাল হয়তো জালে আটকা পড়েছে। জালের ক্ষতি হয় কি না, জেলেদের মনে তখন সেই দুশ্চিন্তা। কিন্তু জাল একটু টানার পরই দুশ্চিন্তা কাটিয়ে জেলেদের মুখে হাসি। সাত মণ ওজনের একটি শাপলাপাতা মাছ যে ধরা পড়েছে জালে! মাছটি সাঙ্গট, পান পাতা মাছ বলেও পরিচিত। ইংরেজিতে এটির নাম স্টিং রে ফিশ।
শাপলাপাতা মাছটি ধরা পড়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের পলতাকান্দা এলাকার আলমগীর মিয়ার জালে। মাছটি বিক্রির জন্য আজ শনিবার সন্ধ্যায় আনা হয় ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়তে। দরদামের পর ৬০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন রায়হান মৎস্য আড়তের মালিক মহরম আলী। পরে তিনি আড়তে বসেই কেজি হিসাবে মাছটি বিক্রি করেন।
জেলেরা জানান, তাঁদের আট সদস্যের দলের নেতা আলমগীর মিয়া। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে তাঁরা মেঘনার ভৈরব মোহনায় মাছ ধরেন। আজ বেলা পৌনে একটার দিকে ভৈরব ও নবীনগর মোহনার মাঝামাঝি স্থানে জাল ফেলা হয়। সোয়া একটার দিকে জাল তোলা হয়। তখন দেখা যায়, জালে এই বিশাল মাছ ধরা পড়েছে। জেলে দলের সদস্য জামান মিয়া বলেন, প্রথমে যখন জাল টেনে তোলা যাচ্ছিল না, তখন তাঁরা ভেবেছিলেন, কোনো বড় ডাল হয়তো আটকা পড়েছে। একটু পরে মাছটি লেজ ভাসায়। পরে মাছটিকে টেনে তোলা হয়। দলনেতা আলমগীর মিয়া জানালেন, আট বছরে অনেক ছোট–বড় মাছ ধরেছেন। তবে শাপলাপাতা মাছ ধরলেন এই প্রথম।
পুরো মাছটি কিনে নেওয়া মহরম আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনে হয়েছে কেজি হিসাবে বিক্রি করলে লাভ পাওয়া যাবে। তাই টুকরো করে কেজি হিসাবে বিক্রি করেছি। কারও কাছে বিক্রি করেছি ৩০০ টাকায়, আবার কারও কাছে সাড়ে ৩৫০ টাকায়। একসময় মেঘনায় ঘন ঘন এই মাছ ধরা পড়ত। আড়তেও অনেকে নিয়ে আসত। এখন কয়েক বছর পরপর একটি বা দুটি মাছ ধরা পড়ে।’