সুদ আদায়ে বসতভিটা লিখে দিতে চাপ?

নওগাঁর রানীনগরে চড়া সুদের টাকা আদায় করতে না পেরে এক ব্যক্তির বসতবাড়িসহ ১৬ শতক জায়গা বায়নানামা রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দাদন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

ওই দাদন ব্যবসায়ীর নাম রশিদুল ইসলাম (৩৮)। তিনি উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের বাসিন্দা। রশিদুল এখন হুমকি-ধমকি ও নানাভাবে চাপ দিয়ে ঋণগ্রহীতার পুরো জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম গৌর সরকার (৪০)। তিনি উপজেলার কুজাইল হিন্দুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রশিদুলের ভয়ে তিনি এখন বাড়িঘরছাড়া। সম্প্রতি তিনি দাদন ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে গৌর সরকার দাদন ব্যবসায়ী রশিদুলের কাছ থেকে চড়া সুদে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধার নেন। কিছুদিন পরই রশিদুল তাঁর দুই সহযোগী দুর্গাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে মিজু ও অহিদুল ইসলামকে নিয়ে গৌরকে ডেকে বলেন, ‘তোর টাকার পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। হয় টাকা ফেরত দিতে হবে, না হলে তোর জমি লিখে দিতে হবে।’

গৌর সরকার গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি অভাবে পড়ে তাঁর (রশিদুল) কাছ থেকে সুদের ওপর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। আমি মূর্খ মানুষ হওয়ায় তাঁর সহযোগীরা আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার বসতবাড়িসহ মোট ১৬ শতক জায়গা বায়নানামা রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। বায়নানামায় ৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা প্রদান দেখিয়ে জমির মোট দাম ৫ লাখ টাকা ধার্য করা হয়েছে। তা পরে আমি জানতে পারি। তাঁদের ভয়ে আমি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রামের কয়েকজন ঘটনা সত্য জানিয়ে বলেন, ‘রশিদুল, মিজানুরেরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। অপর দিকে গৌর সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ও দুর্বল ব্যক্তি বলে তাঁকে নানা হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রশিদুলের গতকাল মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি গৌর সরকারের জমি লিখে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো কিছুই জানি না।’ তিনি দাদন ব্যবসা করেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগে আমি এ কাজ করতাম। কিন্তু এখন আর করি না। গৌর সরকারের সঙ্গে আমার কোনো লেনদেন নেই।’

এ ব্যাপারে রানীনগরের ইউএনও আল মামুন গতকাল প্রথম আলোকেবলেন, ‘গৌর সরকারের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’