বুড়িগঙ্গার তীরে ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে নির্দেশ

রাজধানীর সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে থাকা ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকা এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে যেসব কারখানায় পানি বা বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট (ইটিপি) নেই, তাদের কারণ দর্শানোর সুযোগ দিয়ে অনূর্ধ্ব তিন মাসের মধ্যে যেসব কারখানা ইটিপি স্থাপন করবে না, সেগুলো বন্ধে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপ ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া দূষণ রোধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় ও বুড়িগঙ্গায় সুয়ারেজ সংযোগ না থাকার বিষয়ে দৃশ্যত অসত্য তথ্যের বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে এমডিকে ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।

বুড়িগঙ্গা নদীর পানিদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১০ সালে একটি রিট করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১ জুন তিন দফা নির্দেশনাসহ রায় দেওয়া হয়। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গায় বর্জ্য ফেলা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে সংযুক্ত সব পয়ঃপ্রণালির লাইন (সুয়ারেজ) ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নিঃসরণের লাইন ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশনা রয়েছে।

তবে ওই নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি। শুনানির পর ওই সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিবাদীদের পক্ষ থেকে আদালতে পৃথক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

আদালতে এইচআরপিবির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সৈয়দ মফিজুর রহমান। ওয়াসার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম।

পরে মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওয়াসার পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো সুয়ারেজ লাইন নেই। তবে বিআইডব্লিউটিএর প্রতিবেদনে এসেছে ৬৮টি সুয়ারেজ লাইনের মধ্যে ওয়াসার ৫৬টি সুয়ারেজ লাইন রয়েছে। এ অবস্থায় আদালতের আদেশ অমান্য ও দৃশ্যত অসত্য তথ্য দেওয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে শোকজ করা হয়েছে। ২৭টির মধ্যে বেশির ভাগই ডায়িং কারখানা ও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে।