বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিল জ্যোতি

বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্যই জ্যোতি বাবার লাশ বাড়িতে রেখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১৮ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো
বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্যই জ্যোতি বাবার লাশ বাড়িতে রেখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১৮ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো

বাবা মারা গেছেন। চলছে লাশ দাফনের প্রস্তুতি। স্বজনেরা শোকে বিহ্বল। এমন অবস্থায় বাবার লাশ রেখে জ্যোতি আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর বাংলা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এই উপজেলার হাটাব দক্ষিণ বাড়ৈ শিশু নিকেতন ব্র্যাক স্কুলের পরীক্ষার্থী জ্যোতি।

এলাকাবাসী জানায়, হাটাব মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা জামান মিয়া (৪১)। কয়েক দিন ধরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত রোববার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামান। আজ বেলা ১১টার দিকে তাঁর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জামানের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁর মৃত্যুতে একমাত্র মেয়ে জ্যোতির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বিষয়ে স্বজনেরা দোটানায় পড়েছিলেন। তবে জ্যোতি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবাকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দেয় জ্যোতি। পরীক্ষা শেষে জ্যোতি যখন বাড়ি ফেরে, ততক্ষণে বাবার দাফনও শেষ গেছে।

পরীক্ষা শেষে জ্যোতি আক্তার বলে, বাবা তাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাবা চাইতেন, সে যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হয়। তাই সে যদি এ পরীক্ষা না দিত, তাহলে তার বাবার আত্মা কষ্ট পেত। এ কারণে নিজেকে কষ্ট দিয়ে সে পরীক্ষা দিয়েছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, ‘বাবাকে হারানো যেকোনো শিশুর জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও শিশু জ্যোতি বাবা হারানোর কষ্ট নিয়ে পরীক্ষায় দিয়েছে। আমরা তার পরীক্ষার সময় যতটা সহযোগিতা দরকার করেছি। হল সুপার পুরো সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে সান্ত্বনা দিয়েছেন।’