পদ্মায় বসল আরও একটি স্প্যান, সেতুর প্রায় আড়াই কিমি দৃশ্যমান
প্রায় এক মাসের ব্যবধানে পদ্মা সেতুর আরও একটি স্প্যান বসানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাওয়া প্রান্তে ১৬ ও ১৭ নম্বর পিয়ারের ওপর স্পানটি বসানো হয়। এ নিয়ে পদ্মা সেতুর ১৬টি স্প্যান বসানো হলো। এই স্প্যান বসানোর পর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর ২৪০০ মিটার অংশ এখন দৃশ্যমান হয়েছে। চলতি মাসে আরও দুটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সবশেষ গত ২২ অক্টোবর জাজিরা প্রান্তে ২৪ ও ২৫ নম্বর পিয়ারের ওপর পদ্মা সেতুর ১৫তম স্প্যান বসানো হয়েছিল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটায় পদ্মা নদীর একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে সেতুর ১৬তম স্প্যান ‘৩ডি’ বসানো হয়। তবে আজ সকাল ১০টার দিকে স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বসানোর কাজ শেষ হয়। ২২ ও ২৩ নম্বর পিয়ারের ওপর কয়েক দিনের মধ্যে বসানো হবে ‘৪ডি’ নম্বর স্প্যানটি । এ মাসে ২১ ও ২২ নম্বর পিয়ারে আরেকটি স্প্যান বসানোর প্রস্তুতিও জোরেশোরে চলছে।
সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মূল পদ্মা সেতুর ৪২টি পিয়ারের ওপর বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে আজকেরটি দিয়ে ১৬টি স্প্যান বসানো শেষ হলো। পাঁচটি স্প্যান সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে গেছে। তিনটি স্প্যান রং করা হচ্ছে। আরও ৮টি স্প্যান মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে প্রস্তুত করার কাজ চলছে। বাকি নয়টি স্প্যান দ্রুতই চীন থেকে চলে আসবে। এগুলো আগামী মার্চ মাসের মধ্যে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে। এ ছাড়া সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৩টির সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেছে। বাকি ৯টি পিয়ারের ক্যাপিং (ওপরের অংশ) করা হচ্ছে। স্প্যানের মতো এসব পিয়ারের নির্মাণ সম্পন্ন হবে আগামী মার্চ মাসে। তাই এখন থেকে প্রতি মাসে দুই থেকে তিনটি স্প্যান বসানো হবে। সব মিলিয়ে আগামী জুন মাসের মধ্যে পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দৃশ্যমান হলেও পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত হতে আর কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে জানান প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান জামিলুর রেজা চৌধুরী। আজ তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দ্বিতল সেতুর ওপরে রোড ওয়ে স্ল্যাব বসবে তিন হাজার। একতলা দিয়ে ট্রেন চলবে। এ জন্য রেলওয়ে স্ল্যাব বসবে। এ ছাড়া সেতুর মধ্যে কেবল টানা হবে। সেতুর দুপাশে দুটি ভায়াডাক্ট নির্মাণকাজ চলছে। সবশেষে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হবে।
মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।