বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতির মৃত্যু, ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে একটি বন্য হাতি মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের নারিশ্চা জয়নগর এলাকায় সোমবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

পদুয়া ইউনিয়নের নারিশ্চা বন বিট কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেছেন। মামলায় পদুয়া জয়নগর এলাকার আবুল হাসেম (৫০), তাঁর ছেলে মহিউদ্দিন (২৮), সাহেব উদ্দিন (২৫) ও প্রতিবেশী মো. জেবল হোসেনের (৪০) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাতিটি মারা যাওয়ার পরপরই সোমবার রাতের আঁধারে সেটি পুঁতে ফেলা হয়। পরে খবর পেয়ে বন অফিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে মঙ্গলবার বিকেলে হাতিটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করেন।

বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, পদুয়া জয়নগর এলাকার আবুল হাসেম হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বসতঘর ও কলাবাগানের চারপাশে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখতেন। সোমবার রাতে ওই ফাঁদে জড়িয়ে হাতিটি মারা যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় হাতিটিকে পুঁতে ফেলেন। খবর পেয়ে রাঙ্গুনিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তারা হাতিটি ৭ ফুট গভীর মাটির নিচ থেকে ওঠান। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন হারুন অর রশিদ ও রাঙ্গুনিয়া শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন আলিমুল রাজী হাতিটির ময়নাতদন্ত করেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন হারুন অর রশিদ বলেন, প্রায় ৩ টন ওজনের ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী হাতিটির শুঁড়ে আঘাতের দাগ আছে। হাতিটির সারা শরীরে পোড়া দাগ দেখে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, পাকা আমন ধানের গন্ধে প্রতি রাতে খাবারের খোঁজে রাঙ্গুনিয়ার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্য হাতির দল। উপজেলার কোদালা, শিলক, সরফভাটা ও পদুয়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় এই তাণ্ডব চলছে। হাতির পাল গত এক সপ্তাহে পাঁচ একরেরও বেশি ধানখেত নষ্ট করেছে বলে এসব এলাকার কৃষক দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, লোকালয়ে বন্য হাতির পাল প্রতিবছর হানা দিলেও সেগুলো তাড়াতে কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা নেই।

তবে পাহাড়ে হাতির পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাব ও নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এভাবে হাতির দল হানা দিচ্ছে বলে দাবি বন বিভাগের। তাদের দাবি, এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মীরা সতর্ক আছেন।