কার নিয়ে কাড়াকাড়ি: দিনভর পুলিশের অভিযান

অভিযানে উদ্ধার করা মুঠোফোনের একটি বাক্স। গতকাল কোতোয়ালি থানায়।  প্রথম আলো
অভিযানে উদ্ধার করা মুঠোফোনের একটি বাক্স। গতকাল কোতোয়ালি থানায়। প্রথম আলো

সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় একটি প্রাইভেট কার থেকে চোরাই মুঠোফোন গায়েবের ঘটনায় অভিযানে নেমেছে মহানগর পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ভোরের দিকে নগরের তিনটি পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল ও তিনটি বাক্সবন্দী অবস্থায় ২৭৯টি মুঠোফোন সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

গত শনিবার রাতে জালালাবাদ থানা-পুলিশের জিম্মায় থাকা নম্বরবিহীন প্রাইভেট কার থেকে এসব মুঠোফোন সরানো হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্র জানায়, প্রথম দফায় তিনজনকে আটক করে তিনটি বাক্সে ২৭৯টি মুঠোফোন সেট উদ্ধার করা হয়েছে। ফারুক মিয়া, মোশাররফ হোসেন খান ও জহিরুল ইসলাম ওরফে সোহাগ নামের তিনজনের কাছ থেকে ঘটনার সময় ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলও থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

গত শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে নগরের সুবিদবাজার এলাকায় একটি প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে কয়েকজন। এরপর ওই কার থেকে দুজন পালিয়ে যায়। মোটরসাইকেল দিয়ে দুজন লোক ঘটনাস্থলে পুলিশ পরিচয় দিয়ে কারটি নিয়ে যায়। এর প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর প্রাইভেট কারটি নম্বরবিহীন অবস্থায় মহানগরের জালালাবাদ থানা এলাকার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের তেমুখীতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কারটি এখন জালালাবাদ থানা হেফাজতে রয়েছে। ঘটনাস্থলে ক্লোজসার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া গেলে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোয় ‘চোরাই মুঠোফোন গেল কোথায়/কার নিয়ে কাড়াকাড়ি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

অভিযানসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এ তিনজনের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিসহ তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দুজনের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জালালাবাদ থানা হেফাজতে রাখা নম্বরবিহীন প্রাইভেট কারটি ছাড়িয়ে নিতে তৎপর হওয়া এক ব্যবসায়ীর দুজন লোক সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। 

সিলেট নগরের শামীমাবাদ আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীর মুঠোফোন কথোপকথনের রেকর্ড তথ্য অনুযায়ী, প্রাইভেট কারটিতে ৪০ লাখ টাকা দামের ৭০০টি মুঠোফোন ছিল। অভিযানে উদ্ধার করা মুঠোফোনগুলো জালালাবাদ থানা হেফাজতে থাকা কার থেকে সরানো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল সুবিদবাজার এলাকায় পরিবহনস্ট্যান্ড পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিবহন শ্রমিকনেতা জানান, গত সোমবার রাত থেকে অভিযানটি শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দল তাঁর বক্তব্য দিয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চোরাই মুঠোফোন সেট বহনকারী প্রাইভেট কার নিয়ে কাড়াকাড়ি করা ছয়জনের মধ্যে অন্তত দুজনের কথাবার্তায় পুলিশ সন্দেহ করছে।’

নির্মলেন্দু চক্রবর্তী অভিযান চলমান অবস্থায় এ সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, উদ্ধার করা বাক্স খুলে ২৭৯টি মুঠোফোনের এটি জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো সীমান্তের ওপার থেকে চোরাচালানির মাধ্যমে আনা হয়েছে। আটক তিনজনের সঙ্গে চোরাচালান কিংবা ব্যবসায়ী পরিচয়ের বড় কোনো চক্র জড়িত।