কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনা: তূর্ণা নিশীথার লোকোমাস্টারসহ ৩ জনকে দায়ী করেছে ৩ তদন্ত কমিটি

তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ফাইল ছবি
তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় গত ১২ নভেম্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার তাছের উদ্দিন, সহকারী লোকোমাস্টার অপু দে এবং গার্ড মো. আবদুর রহমানকে দায়ী করেছে এই ঘটনায় গঠিত তিনটি তদন্ত কমিটি। তাঁদের ইতিমধ্যে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ বুধবার রেলভবনে সংবাদ সম্মেলনে করে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদনের এ তথ্য তুলে ধরেন।

মন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় মোট পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এর মধ্যে একটি রেল মন্ত্রণালয় করেছিল। আরেকটি বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের করা এবং অপরটি রেলের পূর্বাঞ্চলের কর্তৃক গঠিত।

রেলমন্ত্রী বলেন, এই তিনটি কমিটি প্রায় একই ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। রিপোর্টে দেখা যায় আন্তনগর ৭৪১ নম্বর তূর্ণা-নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার এবং গার্ড সিগন্যালগুলো যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ না করে ট্রেন পরিচালনা করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে কমিটি লোকোমাস্টারসহ পরিচালনায় থাকা এসব ব্যক্তিরা ঘুমিয়ে ছিলেন এমন আলামত তারা পাননি।

দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি সুপারিশ

মন্ত্রী বলেন, এই তদন্ত কমিটিগুলো ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার এবং গার্ডের কাজ নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য লোকোমটিভে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা, ট্রেনের পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শূন্য পদ পূরণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া, স্টেশন ও ট্রেনর মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ক্লোজ ইউজার গ্রুপের মোবাইল ফোন অথবা অন্যান্য আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং বাংলাদেশ রেলওয়েতে অটোমেটিক ট্রেন স্টপ ব্যবস্থা চালু করা।

গত ১২ নভেম্বর গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনের বাইরে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তূর্ণা নিশীথা উদয়ন এক্সপ্রেসের মাঝামাঝি বগিতে ঢুকে যায়। হতাহতরা সবাই উদয়নের যাত্রী বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। তূর্ণা নিশীথার চালক তাসের উদ্দিন ইঞ্জিন চালু রেখে পালিয়ে যান। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এ ঘটনায় ১৭ জন মারা যান ও ৫৭ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।