'মাদক দুর্বৃত্তদের অবৈধ সম্পদ ভোগ করতে দেওয়া হবে না'

ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি
ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি

মাদক দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে তারা তাদের এই অবৈধ সম্পদ ভোগ করতে না পারেন। এ নিয়ে আপসের সুযোগ নেই। এমন মন্তব্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের।

আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ওই দপ্তরের মাঠ পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ও অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য চান দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আপনারা মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। আপনারাই জানেন কারা মাদক ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করছেন। আপনারা প্রয়োজনে নিজেদের নাম গোপন রেখে মাদক ব্যবসায়ীদের অবৈধ মাদক ব্যবসা ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য কমিশনে পাঠান। আপনাদের নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে। আমরা শুধু তথ্য চাই। তথ্য পেলেই অপরাধীদের আমলে নিয়ে আসা হবে। দুর্নীতি ও মাদক নির্মূলে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করতে চাই। এখানে আপসের সুযোগ নেই।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাস একই সূত্রে গাথা। মাদক ব্যবসায়ী যাদের অনেকে গডফাদারও বলেন, এদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছ থেকে নেওয়া তালিকা অনুযায়ী কমিশন তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবস্থাপনায়ও কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সমাজে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি-নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন আছে। অনেকের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যরও অভিযোগ আছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, নিজেদের মনোভাব পরিবর্তন না করতে পারলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পাওয়া যায়। আবার এসব কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও চিকিৎসার নামে অসহায় পরিবারগুলোর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। এসব বন্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান দুদক চেয়ারম্যান।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মনে করলে কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর সই করতে পারে বলে আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করা যেতে পারে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সীমান্ত দিয়েই মাদক দ্রব্য দেশে আসছে। তাই সীমান্তে যারা এসব নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেন তারা সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করবেন । সবাইকে মনে রাখতে হবে দেশের কোথায়- কে- কীভাবে দায়িত্বপালন করেন এ তথ্য কমিশনের কাছে চলে আসে। আমরা অনেক তথ্য পাচ্ছি। দুর্নীতির মাধ্যমে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন তাদের তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক সঞ্জীয় কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।