ছেলের চাকরি ফিরে পেতে মুক্তিযোদ্ধা বাবার অনশন অব্যাহত

ছেলের চাকরি ফিরে পেতে আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিন চলছে মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মহন্ত ও তাঁর পরিবারের। ব্যাংক ফটকের সামনে, রংপুর, ২০ নভেম্বর। ছবি: মঈনুল ইসলাম
ছেলের চাকরি ফিরে পেতে আমরণ অনশনের দ্বিতীয় দিন চলছে মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মহন্ত ও তাঁর পরিবারের। ব্যাংক ফটকের সামনে, রংপুর, ২০ নভেম্বর। ছবি: মঈনুল ইসলাম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রংপুর শাখায় ছেলের চাকরি ফিরে পেতে মুক্তিযোদ্ধা বাবা রঙ্গলাল মোহন্তের আমরণ অনশন অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সেখানেই তাঁকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যাংকের ফটকের সামনে ফুটপাতে বসে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তিনি ও তাঁর পরিবার।

মুক্তিযোদ্ধা বাবা রঙ্গলাল মোহন্তের ছেলে সাধন চন্দ্র বাংলাদেশ ব্যাংকের রংপুর শাখায় মুদ্রা ও নোট পরীক্ষক পদে চাকরি করতেন। চলতি বছরের ২৬ মে বান্ডিলের টাকা গণনায় কম হওয়ায় তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ১৩ নভেম্বর তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দেওয়ার নির্দেশনামা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আজ অনশনরত মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মোহন্তের কাছে যান জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মোজাফফর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক। এ ছাড়া হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রংপুর জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন। কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সুশান্ত ভৌমিক বলেন, ‘অনশন কর্মসূচিতে আমাদের পক্ষ থেকে তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

সাধন চন্দ্রের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী এলাকায়। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসে রংপুরে আমরণ অনশন করছেন তাঁরা। অনশন কর্মসূচিতে আছেন চাকরিচ্যুত সাধন চন্দ্র, তাঁর বাবা রঙ্গলাল মোহন্তসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মোহন্ত অসুস্থ অবস্থায় দেখা যায়। তিনি কোনো কথা বলতে পারছেন না। পাশে তাঁর ছেলে সাধন চন্দ্রসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বসে ছিলেন।

সাধন চন্দ্র বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর শাখায় মুদ্রা ও নোট পরীক্ষক পদে সাত বছর চাকরি করেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের মে মাসে নোট গণনাকালে একটি বান্ডিলে ৫০ টাকার একটি নোট এবং ৫০০ টাকার বান্ডিলে দুটি নোট কম পাওয়া যায়। এতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা গণনায় সামান্য ভুল হওয়ায় আমিসহ সাতজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্যে আমাকেই শুধু চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে। আমি এ ঘটনার পুনঃ তদন্ত দাবি করছি।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর শাখার উপমহাব্যবস্থাপক ও এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফজলার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা গণনায় কিছু টাকা কম পাওয়া গেছে। বিষয়টি আমি তদন্তও করেছি। এতে আরও কারও নাম আসতে পারে। কিন্তু সাধন চন্দ্রকে চাকরি থেকে অব্যাহতির বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।’