দুর্নীতিবিরোধী বড় অভিযানের সক্ষমতা দুদকের আছে: চেয়ারম্যান

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পদক্ষেপের কারণে গত সাড়ে তিন বছরে ব্যাংক খাতে লোপাট হওয়া প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এ সময়ে জনআকাঙ্খা অনুযায়ী এগোতে না পারলেও ‘নখদন্তহীন বাঘের’ অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিজ দপ্তরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার সংস্থাটির পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন অনেক প্রভাবশালীকে দুদকের কার্যালয়ে নিয়ে এসেছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর মাধ্যমে মানুষের প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ করেছে। তবে বিশাল বিশাল দুর্নীতিগুলো খুঁড়ে বের করতে না পারাকে ব্যর্থতা হিসেবে মানছেন তিনি।

এ সময় সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গেও কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এ পর্যন্ত দুদকের তালিকায় ১৬৭ জনের নাম এসেছে। তবে তিনি বলেন, তালিকায় নাম আসা মানেই অনুসন্ধান নয়। তাদের সম্পর্কে সবকিছুই প্রাথমিকভাবে খতিয়ে দেখার পরই আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু হবে।

দুদকের সূত্র জানিয়েছে, তালিকা ১৬৭ জনের হলেও আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে ১১৮ জনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাব্যবস্থাপক বরাবর দুদকের পরিচালক ইকবাল হোসেনের পাঠানো চিঠিতে ১১৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানানো হয়। তাঁদের ব্যক্তিগত ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবের বিশদ তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর বাইরেও শুদ্ধি অভিযানে যেসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ ও তলব করা হয়েছে সবার তথ্যও চেয়েছে সংস্থাটি।

অভিযান প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘সরকার নিজেদের অভিযান চালাচ্ছে। আর দুদক নিজেদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করছে। তবে সরকারের অভিযানের মাধ্যমে সরকার তাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখাচ্ছে। এটা দুদকের কাজকে উৎসাহিত করেছে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা শুধু সরকারকে দিয়ে হয় না। সব রাজনৈতিক দলের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকারকেই আমি রাজনৈতিক সদিচ্ছা বলব।’

চলমান শুদ্ধি অভিযানে একটি বড় তালিকা ধরে কমিশন যে অনুসন্ধান করছে সেটা একটি বড় কর্মযজ্ঞ। দুদকের সে সক্ষমতা কতটা—এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের যে উদ্যোগ সেটাকে জনগণের প্রত্যাশা অনুসারে পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে চাই। সে সক্ষমতা দুদকের আছে। সরকারের যে উদ্যোগ সেটা জনগণের চাপের কারণেই হচ্ছে। আমাদের ওপরও জনগণের প্রত্যাশার চাপ আছে। আমরা এটাকে সফল পরিণতি দিতে পারব।’