যৌন হয়রানির অভিযোগে টেনিস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মৌলভীবাজারের অ্যাথলেট একাডেমির এক কোচের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে এক নারী অ্যাথলেট। এবার বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে এ দেশে খেলতে আসা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক টেনিস খেলোয়াড়। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে গুলশান থানায় গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ওই খেলোয়াড়ের স্বজনেরা। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই খেলোয়াড় দেশ ছেড়েছে।

আইটিএফ টুর্নামেন্টে খেলতে ৪ নভেম্বর বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসেন ভুক্তভোগী ওই খেলোয়াড়। ঢাকার টুর্নামেন্ট শেষে খুলনায় শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিসে অংশ নেওয়ার কথাও ছিল তার। কিন্তু এমন ঘটনার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মেয়েটির ওই টুর্নামেন্টে আর খেলতে চায়নি। রাজশাহীতে আরেকটি আইটিএফ টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে আতঙ্কে সেখান থেকে ফিরে আসে সে।

এ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার প্রথম আলোর পক্ষ থেকে গোলাম মোর্শেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে কথা বলার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি জবাব দেননি।

তবে, এ ব্যাপারে টেনিস ফেডারেশনের সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী দ্বীন বলেন, ‘ঘটনাটি এখনো পর্যন্ত আমরা জানি না। তবে এমন কিছু যদি হয়ে থাকে, তা সত্যিই দুঃখজনক। সবকিছু জেনে, তদন্ত করে আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।’

>সম্প্রতি ঢাকায় আন্তর্জাতিক টেনিস টুর্নামেন্টে খেলতে এসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কিশোরী টেনিস খেলোয়াড়। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

গতকাল রাতের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নিয়েছে গুলশান থানা। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে, ‘আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি শ্লীলতাহানির বিষয়ে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। দোষী হলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদের এমন আচরণে স্তম্ভিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ওই কিশোরী খেলোয়াড়। ঢাকায় আত্মীয়স্বজনদের না জানিয়ে ১৪ নভেম্বর ফিরে যায় সে। কিন্তু সেখানে গিয়েও প্রথমে তার বাবাকে সরাসরি ঘটনাটি বলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এক আত্মীয়কে মেইল করে পুরো ঘটনা জানায় সে।

ওই ই–মেইল থেকে জানা যায়, টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওই কিশোরী খেলোয়াড়কে একদিন বাইরে ডিনারে আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নিজের প্রাইভেট কারে অশোভন আচরণ করেন। মেয়েটি এর প্রতিবাদও জানায়। পরে তাঁর বাসায় নিয়ে গিয়ে আবারও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার করলে সাধারণ সম্পাদক উবার ডাকতে বাধ্য হন। পরে গভীর রাতে মেয়েটি একা ঢাকা ক্লাবে তার আবাসে ফিরে আসে।

সেই মেইল পড়েছেন মেয়েটির বাবা। পুরো ঘটনা জেনে মেয়েকে নিয়ে তিনি আবার ঢাকায় আসেন। শরণাপন্ন হন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেছেন মেয়ের বাবা। গতকাল রাতে দেশে ফিরে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘আর কোনো মেয়ে বাংলাদেশে খেলতে এসে যেন এই সাধারণ সম্পাদকের যৌন হয়রানির শিকার না হয়।’

আরও পড়ুন: