দুদকের রিমান্ড শেষে কারাগারে সেলিম প্রধান

সেলিম প্রধান
সেলিম প্রধান

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধানকে রিমান্ডে ৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে ফেরত পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে আদালতে নেওয়ার পর আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সেলিম প্রধানকে গত রোববার দুপুর ১২ টার দিকে ৭ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই তাঁকে ফেরত পাঠানো হয় বলে দুদক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, ৫ দিনের জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম প্রধান কাছ থেকে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসা, তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যসহ নানা ধরণের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। সেলিমের সম্পদ সম্পর্কেও বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁকে নিয়ে তাঁর অফিস ও বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সমপরিমাণ ২৩টি দেশের মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইনে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে দুটি মামলা হয়।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলাটি করেন উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সেলিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ প্রিন্টিং ও অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারের হিসাব আয়কর নথিতে না দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকিসহ অবৈধভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা অর্জন করেছেন।

সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ নিয়ে ১৬ টি মামলা করল দুদক। এর আগে ঠিকাদার জি কে শামীম, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও তাঁর ভাই রুপন ভূইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূইয়া, কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ ও এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এবং যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সুমি রহমান এবং কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান, তারেকুজ্জামান রাজীব, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান ও জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে দুদক।

মামলার পর এ পর্যন্ত জিকে শামীম, খালেদ মাহমুদ ভূইয়া ও লোকমান হোসেন ভূইয়াকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।