টেলিভিশন যেন ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়ী স্বার্থে ব্যবহার না হয়: তথ্যমন্ত্রী

বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার আলোচনা সভার আয়োজন করে। ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। ঢাকা, ২১ নভেম্বর। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার আলোচনা সভার আয়োজন করে। ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। ঢাকা, ২১ নভেম্বর। ছবি: সংগৃহীত

টেলিভিশন যেন ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়ী স্বার্থে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘মনে রাখা প্রয়োজন, আমার প্রতিষ্ঠান যেন আমার স্বার্থরক্ষার কাজে ব্যবহার না হয়, এই দৃষ্টিকোণ থাকা প্রয়োজন। আমি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি বা এর সঙ্গে যুক্ত আছি বলেই আমার ব্যবসায়ী স্বার্থ, ব্যক্তিগত স্বার্থে যেন ব্যবহার না হয়, সেটি দেখার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’

বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে আরটিভির সহায়তায় ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

‘কেমন আছে দেশের টেলিভিশন?’ শীর্ষক আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, ‘শিশু-কিশোরসহ আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর টেলিভিশনের প্রভাব ব্যাপক। যে মাধ্যমের এত বড় প্রভাব, সেটিকে আমরা জাতিগঠনের বিশাল কাজে লাগাতে পারি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতি গঠনে আমাদের টেলিভিশন অনন্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি ও ভবিষ্যতের স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছানোর জন্য যেমন মেধা, মূল্যবোধ ও দেশাত্মবোধসম্পন্ন জনগোষ্ঠী দরকার, তা তৈরির সক্ষমতা আমাদের টেলিভিশনের আছে।

‘নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মপ্রত্যয়, দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধ ও মূল্যবোধের উন্মেষ ঘটিয়ে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়া তোলার দায়িত্ব আমাদের’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনুষ্ঠান তৈরি ও সাজানোর ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো যদি আমরা মাথায় রাখি, তাহলে যে অনুষ্ঠানই আমরা করি, সেটার মাধ্যমেই এ দায়িত্ব পালন সম্ভব।’

সমাজের কল্যাণের দিকে দৃষ্টি রাখাকে টেলিভিশনের দায়িত্ববোধের অংশ বলে বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, কিছু বিদেশি চ্যানেলে কীভাবে সংসার ভেঙে যাচ্ছে, পরকীয়া হচ্ছে বা একে অপরের বিরুদ্ধে কূটচাল দিচ্ছে, সেটি দেখাতে পারে। মানুষও এগুলো দেখতে আগ্রহী হতে পারে। কিন্তু দর্শকপ্রিয়তার জন্য এসব বিষয় দেশে দেখানো উচিত নয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি সিরিয়াল যেগুলো চলছে, সেগুলোর অনুমতি লাগবে। কোনো কোনোটি অনুমতি নিয়েছে। যারা অনুমতি চেয়েছে, সেগুলোর প্রক্রিয়াধীন। একটি সিনেমা মুক্তি পেতে হলে তাকে সেন্সর বোর্ড হয়ে অনুমতি নিতে হয়। সে জন্য খুব শিগগির আমরা একটি কমিটি গঠন করে দেব। এটি সেন্সর বোর্ড হবে না, কমিটি হবে। সেই কমিটি দেশের আর্থসামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট এবং আমাদের জনগোষ্ঠীর কল্যাণের বিষয়টি বিচার-বিশ্লেষণ করে সিরিয়ালের অনুমতি দেবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টেলিভিশনে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের চাকরির পর্যাপ্ত আইনি সুরক্ষা নেই। সেটি করার জন্য আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সুরক্ষার ব্যাপারে একটি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিদ্যমান সম্প্রচার নীতিমালার আলোকে সেটি করা সম্ভব। এ বিষয়ে মালিকদের বিশেষ দায়িত্ব আছে বলে আমি মনে করি।’

 আলোচনায় অংশ নেন ডিবিসি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, আরটিভির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশিকুর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান রেজওয়ানুল হক, একাত্তর টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ, সারাবাংলাডটনেট সম্পাদক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা, চ্যানেল ২৪-এর বার্তাপ্রধান রাহুল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক এ জেড এম শফিউল আলম ভূঁইয়া প্রমুখ।