পরিবহনশ্রমিকদের দাবিতে অসংগতি আছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, পরিবহনশ্রমিকদের দাবিতে অসংগতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটরিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত ‘ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আজ ২১ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনব্যাপী ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ চলবে। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই পক্ষের উদ্বোধন করেন।

মন্ত্রী বলেন, পরিবহনের চালকদের ৯ দফা দাবি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ দাবিগুলোর মধ্যে কোথাও অসংগতি থাকলে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।

সড়কে চলাচলের সময় পরিবহনশ্রমিক ও পথচারী সড়কে আইন মেনে চললে অনেকখানি সফল হব মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেউ আইন মানতে চাই না, আইন মেনে চললে সম্মানিত হওয়া যায়।’ তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে আমরা সড়ক পরিবহন আইন পাস করেছিলাম, যেটা বাস্তবায়ন করার সময় কয়েকটি যৌক্তিক জটিলতা দেখা দিয়েছিল। সমস্যা সমাধানে বুধবার মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেসব গাড়ির চালক হালকা যানবাহনের লাইসেন্স নিয়ে ভারী গাড়ি চালাচ্ছেন, তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স আপডেট করে নেওয়ার জন্য ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দূরপাল্লার ট্রাক, লরির চালকের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে। আমরা চাই সবাই নিরাপদ থাকুন। যারা বিশ্রাম ছাড়া গাড়ি চালান, তাঁদের দিয়ে দুর্ঘটনা হয়।’

মন্ত্রী জানান, এই সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ব্যাপারে পরিবহন নেতাদের আপত্তি ছিল। তাঁরা ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। বাকিগুলো যুগোপযোগী হিসেবে তাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় চলতে কার কী দায়িত্ব ও করণীয়-বর্জনীয়, সে বিষয়ে সচেতন করতে ট্রাফিক পক্ষ করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, আইন যথাযথভাবে মানলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে।’

অনুষ্ঠানে আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘পুলিশ ট্রাফিক এনফোর্সমেন্টের একটি অংশ পালন করে থাকে। সড়কে কোনো কিছু হলে আমরা ট্রাফিক পুলিশকে দোষারোপ করে থাকি। আমরা যারা রাস্তা ব্যবহার করি, আমাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের সবার মধ্যে যেন আইন না মানার সংস্কৃতি কাজ করে।’ তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ রাস্তা থাকার দরকার। সেখানে বাংলাদেশে রাস্তা রয়েছে মাত্র ৮ ভাগ। ড্রাইভার, মালিক-শ্রমিক ও পথচারী—সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়ক পরিবহন আইনটি করা হয়েছে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য। জরিমানা আদায় করা সরকার বা ট্রাফিক পুলিশের উদ্দেশ্য নয়।

অনুষ্ঠানে মালিক-শ্রমিক, চালক, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।