সিলেটে একশনএইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্কের উদ্বোধন

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে একশন এইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসব। সিলেট, শনিবার। ছবি: আনিস মাহমুদ
সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে একশন এইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসব। সিলেট, শনিবার। ছবি: আনিস মাহমুদ

‘গৃহস্থালির সেবামূলক কাজের মূল্যায়ন, আনবে সমতা করবে উন্নয়ন’ স্লোগানে সিলেটে আজ শনিবার শুরু হয়েছে একশনএইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসব। শহরতলির কামালবাজার এলাকার লিডিং ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এ বিতর্ক উৎসব চলছে।

সকাল সাড়ে নয়টায় বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী। পরে মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

বক্তব্যে উপাচার্য মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সমাজকে আলোর দিকে নিয়ে আসার জন্য যুক্তি হচ্ছে মূল মাধ্যম। তাই এই বিতর্ক সমাজের জন্য খুবই কাজে আসবে। চর্চার মাধ্যমে যুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে এই আয়োজন অবশ্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। উন্নত বিশ্বে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করেন। কিন্তু বাংলাদেশে তা হচ্ছে না। সামাজিক এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। নারীকে তাঁর যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে।’

প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন বলেন, ‘নারী-পুরুষ সমানে সমান। কাজগুলোকে আমরা ভাগাভাগি করে সম্মিলিত প্রয়াসে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই। নারী-পুরুষ সমানতালে হাতে হাত রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশ নিক, এটা আমরা চাই।’

একশনএইড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কর্মকর্তা নূরে জান্নাত বলেন, ‘নারীর গৃহস্থালির কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন না হওয়ার কারণে নারীরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে লালমনিরহাটের শিউল নারীদলের সদস্য অজিফা বেগমও বক্তব্য দেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের অনুষ্ঠান সম্পাদক তামান্না ইসলাম।

উদ্বোধনী পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের হাতে আয়োজকের পক্ষ থেকে স্মারক-ক্রেস্ট ও উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। স্মারক-ক্রেস্ট তুলে দেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ। উদ্বোধনী পর্বে লিডিং ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোস্তাক আহমাদ দীন, সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী পর্ব শেষে বেলা সোয়া ১১টা থেকে সিলেট অঞ্চলের বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সিলেটের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের বিতর্ক দল অংশ নিচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ, সিলেট এমসি কলেজ, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিলেট সরকারি কলেজ।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে রয়েছেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব মু. আনোয়ার হোসেন, জাফর সাদেক ও হুমায়ুন কবির, জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ভূঞা, জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত, আবৃত্তিকার নাজমা পারভীন, শিক্ষক শামীম আল-আজিজ, ধ্রুব রঞ্জন রায়, মো. হাসনাত ইবনে রেজা, তানভীর রেজা খান, রাইতা বিনতে আহসান, মো. শেরফ্-উল-আলম, কাজী মো. জাহিদ হাসান ও রানা মজুমদার।

বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে বেলা আড়াইটায় বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিতর্কের ওপর একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া দিনব্যাপী উৎসবের বিভিন্ন পর্বে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।