যাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের রেহাই নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ফাইল ছবি

কক্সবাজারের মহেশখালীতে জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগরদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বর্তমান সরকার সারা দেশকে দস্যুমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত দেশ গড়তে চায়। আজ ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণ করেছেন। আর যাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের রেহাই নেই।

আজকের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মহেশখালীর কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে ১৫৫টি অস্ত্র, ২৮৩টি গুলিসহ সাগর উপকূলের ১২টি বাহিনীর ৯৬ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। কক্সবাজার পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁদের হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া অন্যান্য মামলা থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে। আর যাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের স্থান এ দেশে আর হবে না। গডফাদারদের তালিকাও আমরা হাতে পেয়েছি। তাদেরও রেহাই দেওয়া হবে না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যেখানে যাই, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের চিত্র ভেসে আসে। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেত্রী ও মানুষের আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বদলে দিয়েছেন এই বাংলাদেশকে। কক্সবাজারের উন্নয়নে সমানতালে চলছে কাজ।’

মন্ত্রী বলেন, যাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসতে সরকার সহযোগিতা করবে। আর যাঁরা এখনো নদী বা সাগরে থাকতে চান, তাঁদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। তাঁদের যাঁরা সহযোগিতা করছেন, তাঁদেরও কঠিন শাস্তি হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসী, অপরাধীর স্থান হবে না। যেকোনো মুহূর্তে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের অনিয়মের বিরুদ্ধে যে কেউ কথা বলতে পারবেন। যদি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অন্যায় করে, তাঁদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। তাই যেখানে অপরাধ সংঘটিত হোক না কেন, দ্রুত ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানান।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাংসদ জাফর আলম, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান ও কক্সবাজার কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিটিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি জাহেদ সরওয়ার।

অনুষ্ঠান শেষে আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিদের অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো প্রস্তুতি নেওয়া হয়।