জাবি উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ

জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকার শাহবাগে সমাবেশ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ২৩ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকার শাহবাগে সমাবেশ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ২৩ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণসহ কয়েকটি দাবিতে এবার ঢাকার শাহবাগে সমাবেশ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এতে ডাকসু ভিপি নুরুল হকসহ বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতারাও সংহতি জানান।

আজ শনিবার অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে উপাচার্যের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আগামী সোমবার পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, উপাচার্যকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা ও ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের বিচার, হল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার এবং তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা।

দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণসহ কয়েকটি দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। একই ব্যানারে আয়োজিত আজকের সমাবেশে অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, খুবই বিস্ময়কর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছেন এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য হাজির করছেন, তখন তাদের অভিনন্দন জানানোর বদলে হয়রানি করার নানা রকম পথ তৈরি করা হচ্ছে। অবিলম্বে বর্তমান উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দূর করার দাবি জানান তিনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন এখন জাহাঙ্গীরনগর বনাম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক। তিনি বলেন, যদি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে সম্পৃক্ত না হয়, তাহলে এর সমাধান হবে না। একজন দুর্নীতিবাজ মানুষের অপসারণের দাবিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। রাষ্ট্রযন্ত্র কতটুকু ঘুণে ধরলে এমন একটি ব্যবস্থা হতে পারে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে যখন প্রতিকার পাচ্ছেন না, তখন তাঁরা রাজধানীমুখী হয়েছেন। তাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নৈতিক শক্তি নিয়ে লড়াই করছেন। হুমকি-ধমকি ও চোখ রাঙিয়ে এই আন্দোলনকে দমানো যাবে না।

ডাকসু ভিপি নুরুল হকসহ বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতারাও সমাবেশের প্রতি সংহতি জানান। ২৩ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
ডাকসু ভিপি নুরুল হকসহ বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতারাও সমাবেশের প্রতি সংহতি জানান। ২৩ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফোনালাপ ফাঁস করার অভিযোগ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী বলেন, এটা বেআইনি। যারা তা প্রচার করছেন তাঁরাও বেআইনি কাজ করছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল উদ্দীন, কামরুল আহসান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকীম, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ছাত্রফ্রন্ট নেতা নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন নেতা রাকিবুল হক। সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছুসংখ্যক বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।