প্রতিবছর একটি করে বিয়ে করেন তিনি

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বিয়ের নামে প্রতারণা করার অভিযোগে জাকির হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার ফার্মগেট থেকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রথম আলোকে বলেন, জাকির একজন প্রতারক। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জাকির এ নিয়ে ১৪টি বিয়ে করার কথা স্বীকার করেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর ২৮৬টি বিয়ে করার তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

তেজগাঁও থানার পুলিশ জানায়, জাকির বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় নিজেকে অবিবাহিত এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। তাঁদের মধ্যে অনেককে তিনি বিভিন্ন সময় বিয়ে করেন। বিয়ের পর জাকির নববধূর বাসায় থাকতেন এবং কৌশলে তাঁর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। এসব বিয়ের খবর তিনি কোনো স্ত্রীকে জানতে দিতেন না। সবারই ব্যক্তিগত ভিডিও ধারণ করতেন। কেউ প্রতিবাদ করলে ওই সব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। জাকির ১৪ বছর আগে অর্থাৎ ২১ বছর বয়সে (২০০৫ সাল) প্রথম বিয়ে করেন। এরপর প্রতিবছর তিনি একটি করে বিয়ে করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর জাকির এক তরুণীকে বিয়ে করার কথা বলে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুললেও তাঁকে বিয়ে করেননি। এ ঘটনায় ওই তরুণী মিরপুর থানায় ধর্ষণের মামলা করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাঁর বহু বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়। গত বছরের জুনে জাকির কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আরও তিন নারীকে বিয়ে করেন। জাকির সর্বশেষ ফার্মগেটের এক নারীকে বিয়ে করার কথা বলে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়লেও তাঁকে বিয়ে করেননি। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ওই নারী তেজগাঁও থানায় জাকিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে আজ তাঁকে আদালতে তোলা হবে। এতগুলো বিয়ে করার সহযোগিতার করার অভিযোগে জাকিরের প্রথম স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তেজগাঁও থানার পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, জাকির গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়েকজন নারী থানায় এসে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, প্রতারণা করে জাকির তাঁদের বিয়ে করেছিলেন। ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবেন—এই ভয় দেখিয়ে এত দিন তাঁদের মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। জাকির ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে থাকতেন।