গ্যাসের লাইনে ছিদ্রের কারণেই পাথরঘাটায় বিস্ফোরণ: প্রশাসনের প্রতিবেদন

গ্যাসের লাইনে ছিদ্রের কারণেই চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেই বিস্ফোরণ থেকেই দেয়ালধস হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

আজ রোববার প্রতিবেদন তুলে ধরেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ জেড এম শরীফ হোসেন। এ জন্য ভবন মালিকদের দায়ী করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনে তাঁর কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন শরীফ হোসেন ।

গত রোববার সকালে ভয়ংকর এই দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং অন্তত ১২ জন আহত হয়। ঘটনার দিনই তড়িঘড়ি করে প্রতিবেদন জমা দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ( কেজিডিসিএল)। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যাসের পাইপলাইন ও রাইজার থেকে কোনো বিস্ফোরণ ঘটেনি। সেপটিক ট্যাংকের গ্যাস থেকেই এ দুর্ঘটনা হতে পারে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ জেড এম শরীফ হোসেন বলেন, ভবনটির বাড়তি অংশের (পরে বাড়ানো হয়েছে বেলকনির মতো এ অংশটি) সঙ্গে গ্যাসের রাইজারটি লাগানো ছিল। সেই রাইজার থেকেই ভেতরে যাওয়া গ্যাসের সংযোগ লাইনটিতে ছিদ্র ছিল।এর ফলে গ্যাস বের হয়ে ওই বেলকনিতে জমা হয়। সেখানে থাকা ফুটো দিয়ে ভেতরের কক্ষে চলে যায় বের হওয়া গ্যাস। পরে সকালে ওই ভবনের নিচ তলার বাসিন্দা সন্ধ্যা রানী নাথ পূজা দিতে মোমবাতি জ্বালাতে দেশলাইয়ের কাটি ধরাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটে।

গ্যাসের রাইজারটিতেও ত্রুটি ছিল বলে জানান এ জেড এম শরীফ হোসেন। তিনি বলেন, সেটি ভাঙা অবস্থায় পেয়েছেন। ভবনের মালিককে প্রধান দায়ী করে করে তিনি বলেন, মালিক মূল স্থাপনার বাইরে ভবনে বাড়তি বেলকনি স্থাপন করেছেন।এর ফলে রাইজারটি সেটির সঙ্গে লেগে থাকত। আর অনেক দিন ধরে গ্যাস নিঃসরণ হলেও তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানায়নি।

কেজিডিসিএলের প্রতিবেদনটি মনগড়া বলা যায় কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে এ জেড এম শরীফ তা এড়িয়ে শরীফ হোসেন বলেন, গ্যাসের ছিদ্রের কারণেই বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে সেপটিক ট্যাংকের ভূমিকা নির্ণয় করতে পারিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন, পাথরঘাটার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী।

এক প্রশ্নের জবাবে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।এখন যেহেতু প্রতিবেদনেও তাদের দায়ী করা হয়েছে—তাই সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।