ঢাকা-সিলেট রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয়

সিলেট স্টেশন থেকে কালনী এক্সপ্রেসের ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার সময় সকাল ৬টা ৪০ মিনিট। ২ ঘণ্টা ৫ মিনিট বিলম্বের পর গতকাল রোববার এই ট্রেন ছেড়েছে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ছেড়েছে বেলা পৌনে ১১টায়। আর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ছেড়েছে ১০ মিনিট বিলম্বে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে। 

ত্রুটিপূর্ণ রেললাইন, কুয়াশা ও চালকদের বিশ্রামের কারণে ঢাকা-সিলেট রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচিতে (শিডিউল) বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গতকাল দিনের প্রায় সব কটি আন্তনগর ট্রেন ছেড়েছে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে।

সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর ও ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত শুক্র ও শনিবার থেকে সিলেট-ঢাকা পথে দিনের বেলা চলাচলকারী আন্তনগর কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও রাতে চলাচলকারী উপবন এক্সপ্রেস গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিলম্বে চলেছে। সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পথে দিনে চলাচলকারী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও রাতে চলাচলকারী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা করে বিলম্বে চলাচল করে।

শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে মৌলভীবাজারের শমশেরনগরে ভ্রমণকারী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন শিক্ষক মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ট্রেন ঢাকার কমলাপুর থেকে ছাড়ার কথা ছিল বিকেল ৫টায়। ট্রেনটি ঢাকা ত্যাগ করেছে ৫টা ৪০ মিনিটে।

শমশেরনগর স্টেশনমাস্টার কবির আহমদ ও ভানুগাছ স্টেশনমাস্টার সেলিম আহমদ বলেন, ট্রেন বিলম্বের কারণে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রীরা শীতের মধ্যে সারা রাত স্টেশনে অপেক্ষা করেন। অনেক যাত্রীকে আবার গভীর রাতে ট্রেন থেকে নেমে সারা রাত স্টেশনে অপেক্ষা করতে হয়। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শনিবার কমলাপুর থেকে আন্তনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টার জায়গায় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে আসে। পথিমধ্যে ভৈরব স্টেশনে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনকে বসিয়ে রেখে অন্যান্য আন্তনগর ট্রেনকে পাস দিতে হয়েছে। এ কারণে ট্রেনটি সিলেট স্টেশনে সন্ধ্যা সাতটার স্থলে দিবাগত রাত দেড়টায় পৌঁছায়। 

কুলাউড়া স্টেশনের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী (লোকো মেইনটেন্যান্স) দুলাল চন্দ্র দাশ প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটের কিছু সেতুর কারণে কম গতিতে সাবধানে ট্রেন চলাচল করে। এ জন্য গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রেনের চালকদের বিশ্রাম নিতে হয়, সে জন্যও শিডিউলে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

দুলাল চন্দ্র দাশ আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর চালকদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে সিলেটে ট্রেনের শিডিউলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, চালকসংকটের কারণে রাতে যে চালক ঢাকা থেকে সিলেটে আসছেন, তিনিই আবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। এখন চালকদের বিশ্রামের বিষয়টিও নজরদারি করা হচ্ছে।

রেলওয়ের ঢাকাস্থ বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. মাঈনুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে জননিরাপত্তার কথা ভেবে এখন ট্রেন কিছুটা ধীরগতিতে চালাতে হচ্ছে। চালকের স্বল্পতার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কার চিন্তা করে আন্তনগর ট্রেনের চালকদের কিছুটা বিশ্রামও দিতে হচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি আন্তনগর ও মেইল ট্রেনগুলো বিলম্বে চলাচল করছে। সাপ্তাহিক বন্ধের সময় ট্রেন চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।