মন্ত্রীরা ভেবেচিন্তে কথা বলেন না: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ির নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ির নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো

দেশের নানা ‘সংকট’ নিয়ে মন্ত্রীদের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘কিছু কিছু মন্ত্রী যে উক্তি করছেন, তা ভেবেচিন্তে করেন না। সেই উক্তিগুলো যে কী প্রভাব বিস্তার করতে পারে জনগণের মধ্যে, অর্থনীতিতে বা তাঁদের মন্ত্রিপরিষদে, তা লক্ষ করেন না।’

আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ির নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। এটা পরিচালনার বিষয়টা নিঃসন্দেহে প্রফেশনাল ব্যাপার। যে কারণে আমরা দেখি উন্নত দেশগুলোতে যেটা করে, তারা বিভিন্ন সেক্টর থেকে লোকজন নিয়ে এসে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়। অনেক উন্নয়শীল দেশে এমনকি আমাদের দেশেও বর্তমান সরকারের আগে পর্যন্ত প্রফেশনাল লোকজনকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের বেশির ভাগ সদস্য ‘অনভিজ্ঞ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন , ‘তারা নতুন যে মন্ত্রিপরিষদ তৈরি করেছে, তাতে বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ। তাঁরা প্রফেশনাল নন। দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকে, সে অবস্থায় দেশকে পরিচালনার জন্য যে কৌশল, যে প্রজ্ঞা প্রয়োজন হয়, তার অনুপস্থিতি লক্ষ করছি।’

সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইটস এ ওয়ান পার্টি রুল, ওয়ান পারসন রুল। আর কিছু দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন, তা-ই হবে। তিনি সবকিছু করবেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। যেটা ১৬০ মিলিয়নের একটা দেশ।এভাবে এ রাষ্ট্র চলতে পারে না। যার ফলে এ দেশে সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। সুশাসন না থাকলে দেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে চলে যায়। বাংলাদেশকে এখন পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্র বলা যেতে পারে। কারণ সরকার সব জায়গাতেই ফেল করে যাচ্ছে। সরকার যেহেতু এক দলীয় শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করতে চায়, সে কারণে দলীয় লোকজনকে নিয়োগ করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব জায়গাতেই ব্যর্থতাটা। পেঁয়াজে বলেন, সড়কে বলেন আর আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বলেন। আমরা কখনোই দেখিনি যে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বসতে হয়। তাঁরা বসে বলছেন, সব ঠিক আছে। কিন্তু কিছুই তো ঠিক নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শাসনতন্ত্রে আমাকে সভা-সমাবেশ করার অধিকার পরিষ্কারভাবে দেওয়া আছে। আমরা তো অনুমতি চাই না। আমরা যেটা চাই সেটা হলো, অবগতি করি। কিন্তু তারা যেটা করছে, তা গ্রাম্য মোড়লের মতো। সমাবেশের দুই ঘণ্টা আগে অনুমতি দিচ্ছে। দুই ঘণ্টা আগে অনুমতি দিলে তো একটা সমাবেশ সফল করা কঠিন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বলেই দিয়েছি আমরা এখন শাসনতন্ত্রে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেই মোতাবেক চলব। জোর করে একটা গণতন্ত্রমনা জাতিকে আটকে রাখা যায় না।’

সরকারের পদত্যাগ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতার মূল কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। অবিলম্বে এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে সরকারের পদত্যাগ করে একটা নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করা।

আজ মির্জা ফখরুলের বাসভবনে এই অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. তৈমুর রহমান, সহসভাপতি নুর ই শাহদাৎ, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।