কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান-ময়নুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

ময়নুল হক ও তারেকুজ্জামান রাজিব। ফাইল ছবি
ময়নুল হক ও তারেকুজ্জামান রাজিব। ফাইল ছবি

অস্ত্র মামলায় এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দুজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। গতকাল সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের সংশ্লিষ্ট আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার এটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

যে দুজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ময়নুল হক।

এর আগে অস্ত্র মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, কথিত যুবলীগ নেতা প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম (জিকে শামীম) এবং কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি লীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। মামলাগুলো বিচারের জন্য নথিপত্র ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গত ১৯ অক্টোবর রাজধানীর ভাটারার বসুন্ধরা এলাকা থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিবকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর ভাটারা থানায় পৃথক দুটি মামলা করে র‍্যাব। মামলা দুটির তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে তারেকুজ্জামান রাজিবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ঢাকার আদালত সূত্র বলছে, অস্ত্র মামলায় তারেকুজ্জামান রাজিবের বিরুদ্ধে গতকাল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) প্রণয় কুমার প্রামাণিক। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তারেকুজ্জামান রাজিব দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিজ হেফাজতে রেখে সহযোগীদের সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে আসছিলেন। এর মাধ্যমে চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলসহ ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তারিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেন না। মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান, রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ এলাকায় নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি আছে তাঁর।

অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ময়নুল হক অস্ত্র ও মাদকসহ গত ৩১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর ওয়ারী থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা করে র‍্যাব। আদালতের অনুমতি নিয়ে কাউন্সিলর ময়নুল হককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলা করার ২৪ দিনের মাথায় গতকাল সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক তাহেরা বেগম।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, কাউন্সিলর ময়নুল হক একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর কাছ থেকে ইয়াবা পাওয়া গেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। র‍্যাব ও আদালত সূত্র বলছে, ক্যাসিনোবিরোধী ও শুদ্ধি অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জনসহ ১২ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করে বিচার শুরু হবে। ইতিমধ্যে ছয়টি মামলায় ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলো। বাকি মামলার তদন্তও শিগগিরই শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত নেতা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। গত ৬ অক্টোবর ঘনিষ্ঠ সহযোগী আরমানসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। এক মাসের মাথায় ৬ নভেম্বর অস্ত্র মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় র‍্যাব।