পরিবহনশ্রমিকেরা নিয়োগপত্র পাবেন

আইনে থাকলেও সড়ক পরিবহনশ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। নিয়োগপত্র দেওয়া ও নেওয়া নিয়ে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষের একধরনের অনীহা আছে। এখন থেকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে গাড়ির চালক ও সহাকারীদের নিয়োগপত্র দেবে মালিকপক্ষ। শ্রমিক প্রতিনিধিরাও নিয়োগপত্র নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়টি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়কে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের চিঠি দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

বৈঠক সূত্র জানায়, পরিবহনশ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার জন্য আজকের বৈঠকে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। বৈঠকে নিয়োগপত্র দেওয়া-নেওয়া নিয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ একে অন্যকে দোষারোপ করে। মালিকপক্ষের দাবি, শ্রমিকেরা ঘন ঘন কোম্পানি পরিবর্তন করেন। এ কারণে তাঁরা নিয়োগপত্র নিতে অনীহা দেখান। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষ দাবি করে, মালিকেরা নিয়োগপত্র দিতে চান না।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক বলেন, বৈঠকে পরিবহনমালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আইনেই পরিবহনশ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা বলা আছে। পরিবহনের রুট পারমিটের জন্য আবেদনের সঙ্গে চালকের নিয়োগপত্র দিতে হয়। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষের অনীহার কারণেই এটার বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বৈঠকে আলোচনার পর উভয় পক্ষ একমত হয়েছে, মালিকেরা নিয়োগপত্র দেবেন এবং শ্রমিকেরা নেবেন। শ্রম বিভাগ এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে চিঠি দেবে। সংসদীয় কমিটি শ্রম বিভাগকে এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারক করতে বলেছে।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয়, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সড়ক পরিবহনশ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।

বৈঠকে ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি। কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক এ বিষয়ে বলেন, এই বোর্ডের কার্যক্রম নেই। একটি তহবিল করে দেওয়া হয়েছিল, কোনো উদ্যোগ না থাকায় তহবিল বড় করা যায়নি। এটি কার্যকর করতে শ্রম মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিজের আয়ে পাটকলে মজুরি স্কেল বাস্তবায়ন সম্ভব নয়

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন চালু থাকা ১৩৬টি পাটকলের মধ্যে ৮৮টিতে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) পাটকলগুলোয় উৎপাদিত পাটপণ্য বিক্রি করে যে আয় হয়, তা দিয়ে জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। এটি পাওয়া গেলে বেতন স্কেল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

কমিটির সভাপতি মুজিবুল হকের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শাজাহান খান, ইসরাফিল আলম ও শামসুন নাহার বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।