সেপটিক ট্যাংকে স্ত্রীর মরদেহ, স্বামী গ্রেপ্তার

স্ত্রীকে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লাশ লুকিয়ে রাখার অভিযোগে পুলিশ স্বামী শহীদুল ইসলামকে আটক করে। ছবি: প্রথম আলো
স্ত্রীকে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লাশ লুকিয়ে রাখার অভিযোগে পুলিশ স্বামী শহীদুল ইসলামকে আটক করে। ছবি: প্রথম আলো

দ্বিতীয় স্ত্রী মারুফা বেগমকে (৩৫) হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে পুলিশ স্বামী শহীদুল ইসলামকে আটক করেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

শহীদুল ইসলামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামে।

হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ আগে কালীগঞ্জ থানায় স্ত্রী নিখোঁজ হয়েছেন বলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন শহীদুল।

কালীগঞ্জ থানার দক্ষিণপুর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য আবদুল খালেক বলেন, আজ সকাল নয়টার দিকে সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজা খাতুন তাঁকে জানান যে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ আসছে। তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে সেপটিক ট্যাংকে থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেন। লাশটি শহীদুল ইসলামের স্ত্রী মারুফার বলে শনাক্ত করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসাইন বলেন, গত ১৯ নভেম্বর সোনাতলা গ্রামের শহীদুল ইসলাম তাঁর স্ত্রীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় একটি জিডি করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি শহীদুল ইসলাম একজন ফেরিওয়ালা। সারা দিন কাজ শেষে ১৭ নভেম্বর রাত আটটার দিকে বাড়ি ফিরে দেখি, আমার পাঁচ বছরের ছেলে ঘরে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু আমার স্ত্রী ঘরে নেই। তারপর থেকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পেয়ে জিডি করছি।’

ওসি আরও বলেন, জিডি করার পর শহীদুলকে সন্দেহভাজন হিসেবে নজরদারিতে রাখা হয়। আজ সকালে ইউপি সদস্যের কাছ থেকে খবর পেয়ে সাদা পোশাকের পুলিশ প্রথমে শহীদুলকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের শহীদুল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মারুফাকে হত্যা করে মরদেহ লুকিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন।

শহীদুল ইসলামের ভাষ্য, ১৬ নভেম্বর রাতে মারুফাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। পরে তাঁকে প্রতিবেশী মাসুম বিল্লাহর টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। তিন দিন পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তিনি একটি জিডি করেছিলেন।

নিহত মারুফার বোন শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চন্ডীপুর গ্রামের ফিরোজা বেগম বলেন, তাঁর বোনের সঙ্গে শহীদুল ইসলামের বিয়ে হয় প্রায় সাত বছর আগে। তখন থেকেই তাঁর দুলাভাই বিভিন্ন অজুহাতে তাঁর বোনকে মারপিট করতেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি জানান, মারুফার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করার কথা জানিয়েছেন।