কালো কাপড় সরাতেই বেরিয়ে এল সোনার গয়না

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার থেকে আসা মুরশেদ হোসেন নামের এক যাত্রীর কাছ থেকে ছয় কেজি ওজনের স্বর্ণালংকার জব্দ করেন শুল্ক কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার থেকে আসা মুরশেদ হোসেন নামের এক যাত্রীর কাছ থেকে ছয় কেজি ওজনের স্বর্ণালংকার জব্দ করেন শুল্ক কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত

দুই হাতের ভেলকিতে অতিসাধারণ যে কোনো বস্তুকেও মহামূল্য কিছু বানিয়ে ফেলেন জাদুকরেরা। ভেলকি দেখাতে প্রায়ই তাঁরা ব্যবহার করেন একটুকরো কালো কাপড়। এই কালো কাপড় দিয়ে ভেলকি দেখাতে গিয়েছিলেন মুরশেদ হোসেন নামে এক বিমানযাত্রী। ৪০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি কাতারের রাজধানী দোহা থেকে পানি পানের জন্য একটি গ্লাস সেট হাতব্যাগের ভেতরে রেখে এসেছিলেন। কিন্তু গ্লাসগুলোর ভেতরে কালো কাপড় রাখা ছিল। আর সেই কাপড় খুলতেই বেরিয়ে এল সোনা দিয়ে তৈরি শত শত লকেট, ব্রেসলেট, কানের দুল, গলার হার, চেইন ও আংটি।

সব মিলিয়ে মুরশেদ হোসেনের কালো কাপড়ের প্যাকেট থেকে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১২শ স্বর্ণালংকার। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত তিনটায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসব অলংকারসহ তাঁকে আটক করে ঢাকা কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা।

শুল্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, মুরশেদ হোসেনের কাছ থেকে জব্দ করা এসব স্বর্ণালংকারের ওজন ছয় কেজি ৬০ গ্রাম, যার আনুমানিক মূল্য তিন কোটি ২১ লাখ টাকা।

ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মুরশেদ হোসেন ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রায়ই দেশের বাইরে যান। কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে গতকাল রাতে ঢাকায় আসেন তিনি। গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাঁর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুরশেদ হোসেন তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগেজগুলো স্ক্যানারে দেন। কিন্তু হাতব্যাগটি স্ক্যান করাতে চাইছিলেন না। তিনি শুল্ক কর্মকর্তাদের জানান, হাতব্যাগে ক্রোকারিজ সামগ্রী রয়েছে। কাচের গ্লাস সেট। স্ক্যানারে দেওয়া হলে ভেঙে যেতে পারে। পরে হাতব্যাগটি খুলে গ্লাস সেট পাওয়া যায়। কিন্তু গ্লাসের ভেতরে কালো কাপড়ের প্যাকেট অন্য ধরনের কিছু বস্তু রয়েছে মনে হয়। একপর্যায়ে কালো কাপড়ের প্যাকেট থেকে বিপুলসংখ্যক স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। আটকের পর মুরশেদ হোসেনকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে মামলা করা হয়েছে।

শুল্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মুরশেদ হোসেনের কাছ থেকে ১১৬টি লকেট, ৭৩টি ব্রেসলেট, ১৭৭টি কানের দুল, ৩৫৮টি কানের ছোট রিং, ৭৫টি হাতের বালা, ১৯৮টি গলার চেইন, ৭০টি বিভিন্ন আকৃতির গলার হার এবং ১২২টি আংটি পাওয়া গেছে।