নওগাঁয় বিএনপির সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত ৯

নওগাঁয় বিএনপির সম্মেলনে এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: ওমর ফারুক
নওগাঁয় বিএনপির সম্মেলনে এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: ওমর ফারুক

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের ৯ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক অপর ব্যক্তিরা হলেন বিএনপি কর্মী শহিদুল ইসলাম, শাহিনুর রহমান ও সাজেদুর রহমান। এঁরা সবাই পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

আহতরা হলেন উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ হায়দার (৪৮), বিএনপি কর্মী এরশাদ আলী (৩৬), সাইফুল ইসলাম (৪৭), জাকির হোসেন (২৮), শাহিন আলম (২২), হারুনুর রশিদ (৪২), সুমন ইসলাম (২৭), সেকেন্দার আলী (৫৫) ও বাশার আলী (৩৩)।

স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সদরের মাস্টারপাড়া এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী সোহেল। সকাল থেকেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকেরা বিএনপির অনেক নেতা–কর্মীকে সম্মেলনে যেতে বাধা দিতে থাকেন। বেলা ১১টার দিকে আরেফিন সিদ্দিকী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালান। হামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রবিউল ইসলামের পক্ষের ৯ নেতা–কর্মী আহত হন। আহত নেতা–কর্মীদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আহত নেতা-কর্মীদের মধ্যে চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে রিয়াছত হায়দারকে আহ্বায়ক করে উপজেলা বিএনপির ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকেরা এই আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আহ্বায়ক কমিটিতে দলে নিষ্ক্রিয় এবং রবিউল আলমের পক্ষের লোকজনকে বেশি পদ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা বিএনপির একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন রবিউল আলম।

রবিউল আলম প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্মেলন বানচাল করার উদ্দেশ্যে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছেন। এতে আমার নয়জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।’

পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘রবিউল জেলা বিএনপির ও কেন্দ্রীয় কিছু নেতাকে ভুল বুঝিয়ে প্রকৃত বিএনপির নেতা–কর্মীকে বাদ দিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এখন তাঁর লোকজন নিয়ে কমিটি ঘোষণার চেষ্টা করছেন। সম্মেলন চলার সময় প্রকৃত বিএনপির নেতা–কর্মীদের কমিটিতে পদ দেওয়ার দাবি জানালে রবিউলের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালান।’

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।