জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার নিয়োগ-প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ: আসক

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার ও সদস্য নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। কমিশনের ২০০৯ আইনের কিছু সংশোধনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করে আসক। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে ডেইলি স্টার সেন্টারে আসকের উদ্যোগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে একটি সংলাপ অনুষ্ঠানে এমন কথা জানানো হয়।

সংলাপে আসকের পক্ষ থেকে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ: মানবাধিকারকর্মীদের প্রত্যাশা ও বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, কমিশনের কমিটির চেয়ার ও সদস্য মনোনয়ন-প্রক্রিয়া প্যারিস মূলনীতি ও জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক জোটের সাবকমিটির সুপারিশের সঙ্গে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ নয়। নতুন কমিটি গঠনে নাগরিক সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয় না। আসক জানায়, কমিশন গঠনে আমলাতন্ত্রের প্রভাব ও সরাসরি মানবাধিকারসংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতার অনুপস্থিত রয়েছে।

কমিশন গঠনে প্যারিস নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের সুপারিশ করে আসক। আসকের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংলাপের প্রধান অতিথি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ছিলেন। তাঁর কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা আছে। তিনি বলেন, অভিযোগ ব্যবস্থাপনার জন্য কমিশন অনলাইনে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। এতে অভিযোগকারী খুব সহজে তাঁর অভিযোগের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে পারবেন। এ ছাড়া নাগরিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতার মাধ্যমে কমিশনের বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা কাটানোর জন্য নতুন কমিশন আন্তরিকভাবে কাজ করবে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনটি সংশোধনের জন্য কমিশনকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়। আইনের ১৮ ধারার সংকীর্ণ ব্যাখ্যা, অভিযোগ ব্যবস্থাপনা জনবান্ধব করে তোলা এবং কার্যকরভাবে অভিযোগ মীমাংসা করাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে আসক। মানবাধিকার সংরক্ষণে, সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিতে নতুন কমিশন দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশ প্রকাশ করে আসক।

সংলাপে অংশ নেওয়া মানবাধিকারকর্মীদের বক্তব্যে স্থানীয় পর্যায়ে কমিশনের সক্রিয়তা বৃদ্ধি, স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে মানবাধিকার কমিশন এবং এর প্যানেল আইনজীবীদের সংযোগ বাড়ানো, যেসব এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘন বেশি ঘটছে, সেখানে যাওয়া ও তদন্ত করাসহ নানা বিষয় উঠে আসে।

সংলাপ সঞ্চালনা করেন আসকের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা। তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন হচ্ছে জনগণের আশ্রয়স্থল। সরকার ও জনগণের মধ্যকার সেতুবন্ধের কাজ করে কমিশন। আর কমিশনের এই প্রচেষ্টায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব সময় নানাভাবে সহযোগিতা করে যাবে। সংলাপে দেশের ১০টি জেলার মানবাধিকারকর্মী, বিভিন্ন মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উন্নয়ন সহযোগী ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।