পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথম স্ত্রীর নির্যাতনের মামলা

কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী শামসুন নাহার ওরফে সুইটি। কুমিল্লার নারী ও শিশু দমন আদালতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই মামলা করা হয়। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতে দায়ের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০০৬ সালের ১৮ নভেম্বর মো. সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় শামসুন নাহার সুইটির। তাঁদের ৯ বছর বয়সী এক ছেলে এবং ৫ বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। কয়েক মাস ধরে শামসুন নাহারকে মারধর করে আসছেন সালাহ উদ্দিন। একপর্যায়ে ১১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। ওই টাকা দিলে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেবেন বলে বাদী উল্লেখ করেন। টাকা দিতে না পারায় স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দিচ্ছেন না মো. সালাহ উদ্দিন। বর্তমানে শামসুন নাহার নগরের পুরাতন চৌধুরীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।

মামলার বাদী শামসুন নাহার বলেন, বিয়ের সময় সালাহ উদ্দিন সিএমপিতে পিএসআই পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময়ে তাঁর বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে ৫ লাখ টাকা ধার নেন। ওই টাকা আজও পরিশোধ করেননি। এ ছাড়া সুইটির ৩০ ভরি স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছেন পুলিশের ওই পরিদর্শক। তিনি ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তাহমিনা আক্তার ওরফে পান্না নামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার এক মেয়েকে গোপনে বিয়ে করেন। ওই সংসারে একটি সন্তানও রয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লায় তিনি এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া করছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুইটি।

অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২ অক্টোবর আমি তাঁকে তালাক দিয়েছি। আমাদের বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না। সুইটি (শামসুন নাহার) আমার গায়ে হাত তুলেছে। আমার মাকে মেরেছে। এ নিয়ে বহুবার দরবার হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ও আমাদের নিয়ে বসেছিলেন। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করা হয়। আমি যৌতুক চাইনি। আমি কোনো দ্বিতীয় বিয়ে করিনি। কারও সঙ্গে আমার পরকীয়াও নেই। সুইটির দুলাভাই পুলিশের একজন সাবেক ওসি। তিনি আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছেন।’

কুমিল্লার জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে সালাহ উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী, তাঁর বাবা, দ্বিতীয় স্ত্রী এবং আরেক নারী উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে প্রথম স্ত্রী ও সালাহ উদ্দিন সংসার করবেন না বলে জানান। অপর দুজন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। এখন আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত যদি গ্রেপ্তারের আদেশ দেন, তবে সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হবে। বিধিমোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।