গ্রেপ্তার তিন পুলিশ ও সোর্সকে রিমান্ড নেওয়ার আবেদন

মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির তিন সদস্য ও তাঁদের এক সোর্সকে(ডান থেকে দ্বিতীয়) আটক করে পুলিশে দেয় জনতা। ছবি: সংগৃহীত
মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির তিন সদস্য ও তাঁদের এক সোর্সকে(ডান থেকে দ্বিতীয়) আটক করে পুলিশে দেয় জনতা। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে পকেটে ইয়াবা বড়ি ঢুকিয়ে আটকের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন পুলিশ সদস্য ও তাঁদের এক সোর্সের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে টাঙ্গাইলের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলাম, কনস্টেবল গোপাল সাহা ও রাসেলুজ্জামান এবং তাঁদের সোর্স হাসান আলী।

এই ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সখীপুর থানায় মামলা হয়। মামলায় পাঁচ পুলিশ ও দুই সোর্সসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়।

গ্রেপ্তার করা রিয়াজুল, গোপাল, রাসেলুজ্জামান, হাসান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন কনস্টেবল হালিম, কনস্টেবল তোজাম্মেল ও সোর্স আলামিন।

হালিম, তোজাম্মেল ও আলামিন ঘটনার সময় উপস্থিত থাকলেও একপর্যায়ে তাঁরা সটকে পড়েন।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা পোশাকে থাকা পাঁচ পুলিশ সদস্য ও দুই সোর্স রাজাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় আসেন। তাঁরা এলাকার দিনমজুর মো. বজলুর রহমানের (২৬) পকেটে ইয়াবা বড়ি ঢুকিয়ে দেন। একপর্যায়ে তাঁরা তাঁকে জোর করে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তোলেন। বজলুরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন অটোরিকশাটি আটক করে। বজলুরের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে উপস্থিত লোকজন পুলিশ ও সোর্সদের তল্লাশি করে কিছু ইয়াবা পান। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ ও সোর্সদের পিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রাখেন। পরে তাঁরা সখীপুর থানা-পুলিশে খবর দেন। এ সময় আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকা তিনজন (হালিম, তোজাম্মেল ও আলামিন) পালিয়ে যান।

খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা স্থানীয় লোকজনকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এলাকাবাসী চারজনকে (রিয়াজুল, গোপাল, রাসেলুজ্জামান, হাসান) পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে চারজনকে প্রথমে মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ফাঁড়িতে এবং পরে সখীপুর থানায় নেওয়া হয়। রাতে সেখানে মামলা হয়।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, গত বুধবার একই কায়দায় এএসআই রিয়াজুল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মির্জাপুর উপজেলার টান পলাশতলী গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে আনোয়ারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের নামে থানার এসআই আইনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর তাঁদের টাঙ্গাইলে নেওয়া হয়। টাঙ্গাইলের আদালতে তাঁদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য তিনজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাঁশতৈল ফাঁড়ির এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।