যশোরে আনসার সদস্যকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

যশোরে গুলিতে নিহত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদার। ছবি: সংগৃহীত
যশোরে গুলিতে নিহত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদার। ছবি: সংগৃহীত

যশোরে আনসার ব্যাটালিয়নের বিশেষ সদস্য হোসেন আলী তরফদারকে (৫৫) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে যশোর সদর উপজেলার হাকিমপুর বাজারে এক চায়ের দোকানে বসে গল্প করার সময়ে দুর্বৃত্তরা অতর্কিতে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে।

যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

হোসেন আলী যশোর সদর উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের তরফদারপাড়ার আরশাদ আলী তরফদারের ছেলে। তিনি আনসার ব্যাটালিয়নের বিশেষ সদস্য পদে ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। তিন দিনের ছুটিতে তিনি বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে।

যশোরে গুলিতে নিহত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদারের স্বজনের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো
যশোরে গুলিতে নিহত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদারের স্বজনের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো



পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, সকালে হোসেন আলী বাড়ি থেকে হাশিমপুর বাজারে বাজার করতে আসেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি বাজারে মোশাররফের চায়ের দোকানের সামনে যান। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা সেখানে গিয়ে তাঁকে লক্ষ্য করে ৪/৫টি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাজার অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়ে। হোসেন আলীর লাশ বাজারে রাস্তার পাশেই পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।

হোসেন আলী তরফদারের ভাইপো সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার চাচা ঢাকায় আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি করেন। ছুটিতে তিনি বাড়িতে আসেন। সকালে বাজারে যাওয়ার পর কে বা কারা তাঁকে গুলি করেছে, আমরা তা বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের এসপি মঈনুল হক বলেন, ‘কারা কী কারণে হোসেন আলীকে গুলি করে হত্যা করেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

এসপি বলেন, ‘নিহত হোসেন আলী একসময় নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন সর্বহারা পার্টির সদস্য ছিলেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ৯০–এর দশকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাসীদের আত্মসমর্পণ করানোর উদ্যোগ নেন। তখন হোসেন আলীও আত্মসমর্পণ করেন। তখন পুনর্বাসনের জন্য তাঁকে আনসার ব্যাটালিয়নের বিশেষ সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আগের কোনো শত্রুতার জের ধরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’