এসআইয়ের বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম শিশির কুমার বিশ্বাস। তবে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি গতকাল শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেনকে জানানো হয়। পরে পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহিমকে নির্দেশ দেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসায়ী আলী আহমদের (৬০) অধীনে চাকরি করেন। তাঁর স্বামী, দুই ভাইসহ আরও বেশ কয়েকজন আত্মীয় একই কোম্পানিতে চাকরি করেন। ৩ নভেম্বর আলী আহমেদ তাঁর সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর তিনি তাঁর থাকার সুবিধার্থে বসুরহাটে একটি বাসা ভাড়া নেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই জাকির হোসেন সেই বাসায় গিয়ে আলী আহমদের পাসপোর্ট দেখতে চান। একপর্যায়ে তিনি তাঁর বিমানের ফিরতি টিকিট নিয়ে যান এবং তাঁকে থানায় গিয়ে দেখা করতে বলেন। সেদিনই রাত আটটার দিকে ওই বাসায় আসেন একই থানার এসআই শিশির। তিনি আলী আহমদের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। না দিলে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। পরে ১২ হাজার টাকা দিলে তিনি চলে যান।

ফাতেমার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিমানের টিকিট নিয়ে যাওয়া এবং বাড়িতে গিয়ে ১২ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি তাঁরা গতকাল প্রথমে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ও পরে পুলিশ সুপারকে জানান। এরপরই থানা থেকে এসআই শিশিরের পক্ষে কয়েকজন তাঁদের বাড়িতে যান এবং অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে মাদক মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ শনিবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের তদন্তে প্রাথমিকভাবে এসআই শিশিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে এসআই শিশির ওই বাড়িতে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, ওই নারী তাঁকে ‘ভাই’ ডেকেছেন। এ জন্য তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি তিনি রেখে দিয়েছেন। কোনো টাকা তিনি নেননি।