নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতি খুঁজে বের করা প্রয়োজন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তা তদন্তের দাবি করেছে বিএনপি। আজ শনিবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিভক্ত। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সচিব এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে লোক নিয়োগ দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন কাজ করছেন, যেটা সংবিধানের পরিপন্থী। কারণ এখানে কমিশনের সবাই মিলে একক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেটা করতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন অযোগ্য। এখন যেটা মনে হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশনেও দুর্নীতির তদন্ত হওয়া দরকার। কারণ যে বিষয়গুলো সেখানে ঘটছে সেটা সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিই হচ্ছে বলে জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি-দুর্নীতি কমিশনের অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতির খুঁজে বের করার জন্য কাজ করা প্রয়োজন।’

বিএনপি মহাসচিব একাদশ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তাদের পদত্যাগের দাবি করেন।

নারী কর্মী নির্যাতনে কমিশন গঠনের দাবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিদেশে আমাদের শ্রমিকেরা বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা কাজ করতে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং অনেক সময় শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। তাদের ক্ষেত্র বিশেষে হত্যা পর্যন্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার যে ভূমিকা পালন করা দরকার, সেই ভূমিকার পালন করতে পারছেন না। আমরা মনে করি এটা চরম ব্যর্থতা।।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবে বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। আমরা প্রায় ৭ দিনের অতিরিক্ত সময়ে অপেক্ষা করেছি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে কোনো রেসপনস পাইনি। সেই কারণে আমাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এখন তথ্য অধিকার আইনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই চুক্তিগুলো সম্পর্কে ধারণার জন্য চিঠি দেব। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এই চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থা করব।’

বৈঠকে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি, ভারতে নাগরিক পঞ্জি, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৫০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ নিয়ে আবার নতুন করে গ্রেপ্তার বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আগামী ৩ ডিসেম্বর ও ভারতের নাগরিক পঞ্জির ফলে পুশব্যাক সম্পর্কে ৭ ডিসেম্বর বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করবে। এ ছাড়া সারা দেশে দুর্নীতির ব্যাপকতায় নিয়ে শিগগিরই একটি সেমিনার করা হবে।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সন্ধ্যায় ৬টা থেকে দেড় ঘণ্টা স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও তাঁর মামলার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। স্থায়ী কমিটি আশাবাদ ব্যক্ত করে, বিএসএমএমইউর মেডিকেল বোর্ড সঠিক প্রতিবেদন দেবে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে সুবিচার পাবেন খালেদা জিয়া। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপে যোগ দিয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।