'রাজনীতিতে বণিকায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন ঘটান জিয়া'

হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)
হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে বণিকায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন ঘটিয়েছিলেন। যাঁরা রাজনীতি করতেন, তাঁদের হাত থেকে রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন জিয়া। আর তা পূর্ণতা দিয়েছিলেন এরশাদ।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আজ শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধকালীন যৌথ গেরিলা বাহিনীর প্রধান সংগঠক, ন্যাপ নেতা মোজাফফর আহমদের নাগরিক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। আরও বক্তব্য দেন ন্যাপের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আইভি আহমদ, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, জিয়া ও এরশাদের ধারাবাহিকতায় রাজনীতিকে দূষিত করার ষোলোকলা পূর্ণ করেছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনীতি যে একটা ব্রত, সেটা হারিয়ে গেল। এটা একটি দেশ ও সমাজের জন্য দুঃখজনক।

হাছান মাহমুদ বলেন, কে কত টাকা দলের তহবিলে দিতে পারলেন, তাঁকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়। অর্থবিত্তের মালিকদের অনেকে এমপি হয়েছিলেন। এভাবে রাজনীতিকে বণিকায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালে কীভাবে নির্বাচন হয়েছিল, সেটা অনেকের মনে আছে নিশ্চয়। চট্টগ্রামের জামালখান সড়কে কীভাবে খোলা কিরিচ উঁচিয়ে ভোটের আগের দিন মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছিল, তা অনেকে দেখেছেন। ভোটকেন্দ্রে না যেতে তখন ভীতি তৈরি করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি মানুষের কল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য। সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং দেশ বিনির্মাণের জন্য হচ্ছে রাজনীতি। দেশের ইতিহাসে একজন কিংবদন্তির নাম মোজাফফর আহমদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে অনন্য অবদান রেখেছেন তিনি। তাঁর অসামান্য অবদান ছিল মুক্তিযুদ্ধে। তিনি রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন এবং সে জন্য তিনি আরাম–আয়েশ ত্যাগ করেছিলেন। তিনি চাইলে মন্ত্রী ও অনেক বিত্তবৈভবের মালিক হতে পারতেন।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘রাজনীতি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, রাজনীতি মন্ত্রী-এমপি হওয়ার জন্য নয়। দেশ পরিবর্তন করতে হলে, সমাজ পরিবর্তন করতে হলে দলকে ক্ষমতায় নিতে হয়। রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য। আমি যে কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি, যে মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যে রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাস করি, সেটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য হচ্ছে রাজনীতি। এটি আজকে রাজনীতিবিদেরা ভুলে গেছেন।’

দেশে স্বাধীনতার পক্ষ এবং বিপক্ষের রাজনীতি চলছে বলে হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, তারা বিএনপির নেতৃত্বের জোটে সম্পৃক্ত। ২০-দলীয় জোটের মধ্যে অনেক দল আছে, যাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি তালেবান রাষ্ট্রে রূপান্তর করা, যাঁদের অনেকেই আফগানিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ঘুরে এসেছেন। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর দেশে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনীতি এবং স্বাধীনতার বিপক্ষের রাজনীতি থাকতে পারে না। আমাদের দেশে এমন হওয়া উচিত, সরকারি দল হবে স্বাধীনতার পক্ষে, বিরোধী দলও হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আমি মনে করি, সে জন্য ন্যাপ মোজাফফর, কমিউনিস্ট পার্টিসহ যারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দল আছে, তাদের আরও শক্তি সঞ্চয় করা প্রয়োজন।’