কুষ্টিয়ায় দুই ভাইকে হত্যার দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দুই ভাই হত্যা মামলায় ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলার অপর ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন ও ১ আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় এ রায় দেন।

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করার ঘটনার জের ধরে বখাটের হামলায় ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় খুন হয়েছিলেন ভেড়ামারা উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের মুজিবর রহমান (৫৮) ও তাঁর ছোট ভাই মিজানুর রহমান (৫৫)। এ ঘটনার সাড়ে তিন বছর পর‌ ওই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামাণিকের দুই ছেলে কামরুল প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক, একই গ্রামের নয়ন শেখ। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।

এই মামলায় ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলীর দুই ছেলে নজরুল শেখ ও আব্দুর রহিম, মাহফুজুর রহমান, একই গ্রামের হৃদয় আলী, সম্রাট আলী প্রামাণিক, জিয়ারুল ইসলাম ও ও আশরাফ মালিথাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার আরেক আসামি গোলাপনগর এলাকার আরিফ মালিথাকে ১০ বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, মুজিবর রহমানের বড় ছেলে আশরাফুজ্জামান রতনের মেয়েকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে প্রায়ই উক্ত্যক্ত করতেন একই এলাকার আরিফুল ইসলাম। আরিফুলকে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন মুজিবর রহমানের ছেলে আশরাফুজ্জামান। এতে আরিফসহ তাঁর বন্ধুরা ক্ষিপ্ত হন। ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজ শেষ করে মুজিবর রহমানসহ তাঁর ভাই ও ছেলেরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আসামি নয়ন শেখ, কমল হোসেন মালিথা, আরিফ, কামারুল মালিথা, সুমন মালিথা, নজরুল ইসলাম, রহিম শেখ ওরফে লালিম শেখ, মাহফুজুর রহমান, সিহাব, আশরাফ, সম্রাটসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন। এ সময় আসামিরা মুজিবর রহমান ও তাঁর ভাই মিজানুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মুজিবর রহমান। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁর ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর মুজিবর রহমানের ছেলে জাকারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল হালিম বলেন, এ মামলাটি ছিল চাঞ্চল্যকর। পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পরপরই বিচারকাজ শুরু হয়। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছে।

মামলার বাদী জাকারুল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানচ্ছি।’