মায়ের কাছে বাঁচার আকুতি, ঘণ্টা পার হতেই মিলল গৃহবধূর লাশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ চারাইল্যাপাড়া এলাকায় আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গৃহবধূর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।

মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম মেরিনা আকতার (২৩)। তিনি চারাইল্যাপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী এবং উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনা এলাকার মনুর আলমের মেয়ে। মিজানুর পেশায় মাছের ঘেরের কর্মচারী।

মেরিনার মা দিল নূর বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকাল নয়টার দিকে আমার মেয়ে মেরিনা ফোন করে বলে, মা আমাকে বাঁচাও। এরপর মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর অন্য একজন ফোন করে জানান, মেরিনাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, বারান্দায় মেয়ের লাশ পড়ে আছে।’

দিল নূর বেগম বলেন, দুই বছর আগে মিজানুরের সঙ্গে মেরিনার বিয়ে হয়। সাত মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে তাঁদের। বিয়ের পর থেকে ১০ হাজার, ২০ হাজার করে নানা অজুহাতে অনেক টাকা নিয়েছেন মিজানুর। কয়েক দিন ধরে আবার টাকা এনে দিতে চাপ দিচ্ছিলেন। টাকা দেওয়া হবে বলে জানানোও হয়। কিন্তু এর আগেই মেয়েটাকে মেরে ফেললেন।

মেরিনার চাচা মনছুর আলম দাবি করেন, মেরিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন মিজানুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। মারা যাওয়ার পর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে মেরিনাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে—এমন সন্দেহ হওয়ায় থানায় খবর দিই। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।’

চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক তুষ্ট লাল বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, লাশের গলায় সামান্য জখমের চিহ্ন আছে। এ ছাড়া শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত মেরিনার শরীরে আঘাতের চিহ্ন সামান্য। এ কারণে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। গৃহবধূর মা ও চাচার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মিজানুরকে আটক করা হয়েছে।