পেঁয়াজের দাম কবে কমবে বলতে পারছেন না বাণিজ্যমন্ত্রী

পেঁয়াজ। ফাইল ছবি
পেঁয়াজ। ফাইল ছবি

পেঁয়াজের দাম কবে কমবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তবে তিনি পেঁয়াজের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছেন। মন্ত্রীর মতে, সমস্যা সমাধানের একটাই পথ, দেশি উৎপাদন বাড়ানো।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে টিপু মুনশি এ পরামর্শ দেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে ওই কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, পণ্যের দাম বাড়লেও দোষ, কমলেও দোষ। বাড়লে লেখালেখি হয়। আর কমলে লেখা হয় কৃষক দাম পাচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, পেঁয়াজের সংকট সাময়িক। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা সরকারের বন্ধু। ধর, পাকড়, জোর জবরদস্তি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।

পেঁয়াজের দাম কবে নাগাদ কমবে এমন প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কবে কমবে তা পূর্বানুমান করা সম্ভব নয়। মিশর, উসবেকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানী করা হলে খরচ পড়বে ৪০–৪৫ টাকা। সে জায়গায় যেতে সময় লাগবে। কারণ নতুন বাজারে যাওয়া, আর মিশরে পেঁয়াজের দাম নগদে দিতে হয়। সমস্যা সমাধানের একটাই পথ, দেশি উৎপাদন বাড়ানো। উৎপাদন বাড়াতে হলে কৃষকেরা যাতে ন্যায্য দাম পায় তা দেখতে হবে। দেশি পেঁয়াজ ওঠলে এবং দাম পেতে শুরু করলে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের শেষে বা মাঝামাঝি সময়ে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসবে। মিশর থেকেও যদি পুরোদমে চালান ঠিক থাকে এবং তাদের দাম না বাড়ে তাহলে দাম কমবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করছেন না—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাণিজ্যমন্ত্রীর পরিবারের রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় কি না, তা জানতে চান একজন সাংবাদিক। জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একটা কথা বলি, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন সেটা আমার জানা নাই। আমাদের পরিবারে চেষ্টা করি, সবাইকে বলব ট্রাই টু ইউজ লেস।’

এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই এখন পেঁয়াজের দাম বেশি। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয় আলোচনা হয়েছে। আসন্ন রমজানে যাতে বাজার স্বাভাবিক থাকে সেজন্য এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভা করবেন। তাতে বড় বড় আমদানীকারকেরা উপস্থিত থাকবেন। বার্ষিক চাহিদা কত, উৎপদন কত আর কত আমদানি করতে হবে—তা নিরূপন করা হবে। তিনি পেঁয়াজ ও বাজারদর নিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আশা করেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশ পেঁয়াজ রপ্তানী করতে পারবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, সবজির দাম সরকার কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? রাস্তায় টাকা নেওয়া হয়, খরচ হয়। ফড়িয়ারা যদি বেশি নেয় এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, পণ্যের দাম বাড়লেও দোষ, কমলেও দোষ। বাড়লে লেখালেখি হয়। আবার কমলে লেখা হয় কৃষক দাম পাচ্ছেন না।

তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মোহাম্মদ হাছান ইমাম খাঁন, সেলিম আলতাফ এবং সুলতানা নাদিরা বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান নূর-উর-রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।