এনআইডি জালিয়াতি: ইসির দুই কর্মী রিমান্ডে

রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার ঘটনায় মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁরা হলেন, সত্যসুন্দর দে ও সাগর চৌধুরী। দুজনই ঢাকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে এনআইডি তৈরির প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

গতকাল রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন দুজন। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠান। ওই দিন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রাম ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে।

গত সেপ্টেম্বরে ইসি কর্মচারী জয়নাল আবেদীন গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে জানিয়েছিলেন সত্যসুন্দর ও সাগর এনআইডি জালিয়াতিতে জড়িত। তাঁদের মাধ্যমে জয়নাল রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি করে দিতেন।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ আজ শুনানিকালে আদালতকে বলেন, ইসির কর্মচারী জয়নালের জবানবন্দিতে সত্যসুন্দর ও সাগর ইসির ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি করে দেওয়ার তথ্য উঠে আসে। ঢাকায় দুজনের কাছে রোহিঙ্গাদের তথ্যগুলো পাঠানো হতো। আর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এনআইডি ঢাকা থেকে পাঠিয়ে দিতেন দুজন। তাঁদের রিমান্ডের নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। আসামিদের আইনজীবী তারা ঘটনায় জড়িত নয় দাবি করে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত দুজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত আগস্ট মাসে লাকী আক্তার নামের এক রোহিঙ্গা নারীর ভুয়া এনআইডি ইসির সার্ভারে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আরও ৫৪টি ভুয়া এনআইডি ধরা পড়ে। এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন নামের একজনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ আটক ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। মামলার এজাহারে সত্যসুন্দর ও সাগরের নাম রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের আদেশটি পাওয়ার পর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে।