প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসছেন র‍্যান্ডল শ্রাইভার

র‍্যান্ডল শ্রাইভার। ছবি: পেন্টাগনের ওয়েবসাইট থেকে
র‍্যান্ডল শ্রাইভার। ছবি: পেন্টাগনের ওয়েবসাইট থেকে

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সহকারী মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী র‍্যান্ডল শ্রাইভার দুই দিনের সফরে কাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন। বাংলাদেশ সফরে এসে প্রস্তাবিত দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের বিষয়সহ দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসে র‍্যান্ডল শ্রাইভার প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। গত অক্টোবর মাসে ওয়াশিংটন সফরের সময় তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অত্যাধুনিক অস্ত্র কেনাকাটাবিষয়ক চুক্তি আকসা (একুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং অস্ত্রবিষয়ক গোপন তথ্য বিনিময় ও সুরক্ষার চুক্তি জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) নিয়ে আলোচনা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা গত অক্টোবরে এই প্রতিবেদককে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ উন্নত প্রযুক্তির হেলিকপ্টার ও রাডার কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো দেশের কাছে উন্নত প্রযুক্তির সমরাস্ত্র বিক্রির আগে সেই দেশের সঙ্গে জিসোমিয়া সই করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কেনার আগ্রহ দেখানোর পর থেকেই ২০১৮ সালে দুই দেশ আকসা ও জিসোমিয়া সইয়ের বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেছে।

ওয়াশিংটনের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুরুতে র‍্যান্ডল শ্রাইভারের প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরটি কয়েক দিনের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সফরটি কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে ঢাকায় তাঁর প্রথম সফরে খুব বেশি বৈঠক হচ্ছে না। মূলত এ বছরের বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত দুই চুক্তি সইসহ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে র‍্যান্ডল শ্রাইভারের সফরে।

প্রসঙ্গত, গত জুনে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক ও রাজনীতিবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড হেইলের মধ্যে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব সংলাপেও জিসোমিয়া সইয়ের প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। বৈঠক শেষে প্রচারিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দুই দেশের মধ্যে বিনিময় হওয়া গোপনীয় সামরিক তথ্যের সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে। বাংলাদেশ আলোচনার এ ধারা অব্যাহত রাখার আগ্রহ দেখিয়েছে।

সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের জন্য বাংলাদেশ এরই মধ্যে ফোর্সেস গোল ২০৩০ ঘোষণা করেছে। ওই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম সরবরাহকারী দেশ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্র গেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) পরিদপ্তর আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মার্কিন বিমানবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের আমন্ত্রণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের বিমানবাহিনীর প্রধানদের এক সিম্পোজিয়ামে অংশ নিতে বিমানবাহিনীর প্রধান ওই সফরে গেছেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভারত, ব্রুনেই, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার বিমানবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধানের এই সফর অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের বিমানবাহিনীর মধ্যকার সুসম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।