সরকার মানুষের জীবনের সুখ-শান্তি কেড়ে নিচ্ছে: ফখরুল

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো

ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার পর এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-শান্তি কেড়ে নিচ্ছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। আজ মঙ্গলবার দলের নয়াপল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের মূল্য এখন ২২০-২৩০ টাকা। সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে মানুষকে পেঁয়াজ খেতে নিষেধ করছে। এখন চালের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা এবং আটার দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। তাহলে সরকার কী জনগণকে ভাত খাওয়া বাদ দিতে বলবে? ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। তাহলে কি তেল খাওয়া বাদ দিতে হবে? তিনি বলেন, জনগণ কী খাবে, কী খাবে না তা নির্ধারণ করে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের না। এর অর্থ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের জনসভাগুলোতে প্রচার করেছেন, ‘১০ টাকা সের চাল খাওয়াব, ঘরে ঘরে চাকরি দেব।’ এখন বাজারে প্রতি কেজি চাল ৫৯-৬০ টাকা। পেঁয়াজের দাম ২২০-২৩০ টাকা। এমনকি পেঁয়াজের পাতার কেজি এখন ১০০ টাকা। গত এক বছরের হিসাবে দেখা গেছে, গত এক বছরে সবকিছুর দাম বেড়েছ ৪৩৭ গুণ।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান টিসিবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০০৬ সালে মোটা চালের কেজি ছিল সাড়ে ১৭ টাকা, এখন তা বেড়ে ৩৪-৪০ টাকা হয়েছে। ওই সময় পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮-২০ টাকা, এখন তা বেড়ে ২২০-২৩০ টাকা হয়েছে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৪৮-৫৫ টাকা, এখন তা বেড়ে লিটারপ্রতি ৮০-১১০ টাকা হয়েছে। গরুর মাংসের দাম ছিল ১৪০-১৫০ টাকা । এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৩০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির পণ্যমূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১৩ বছরে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন থেকে চার গুণ।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান মিডনাইট সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কারণ তাদের সরকার গঠনে জনগণের ভোটের দরকার হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তারা নির্বাচনের খোলসে দলীয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রশাসনের ঘাড়ে ভর করে গায়ের জোরে পুনরায় সরকার গঠন করতে চায়। কিন্তু জনগণ তাঁদের এই গণবিরোধী ষড়যন্ত্র আর বরদাশত করবে না। আগামী নির্বাচনে জনগণ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।

মির্জা ফখরুল ভোটারবিহীন নির্বাচন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুনর্নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, অন্যথায় কেবল দ্রব্যমূল্যভিত্তিক সমস্যাই নয়, পুরো জাতির ভবিষ্যৎ জীবন আরও অসহনীয় ও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।