পুলিশ দেখে শঙ্খে ঝাঁপ, এক দিন পর লাশ উদ্ধার

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দোহাজারী এলাকায় পুলিশ দেখে শঙ্খ নদে ঝাঁপিয়ে পড়া নিখোঁজ ছাবের আহমদের (৬০) লাশ এক দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে নদের দোহাজারীর বার্মা কলোনি ঘাট এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন লাশটি উদ্ধার করেন।

ছাবের আহমদ উপজেলার পূর্ব দোহাজারী এলাকার বাসিন্দা। তবে পুলিশ ছাবের আহমদকে ধাওয়া করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

ছাবের আহমদের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন বলেন, গত রোববার রাত সাতটার দিকে দোহাজারীর বার্মা কলোনি এলাকায় পুলিশের একটি দল এসে ছাবের আহমদসহ স্থানীয় কয়েকজনকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় কলোনির একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন ছাবের। পরে পুলিশ ছাবেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য বার্মা কলোনি ঘাট এলাকায় শঙ্খ নদের পানিতে ঝাঁপ দেন তিনি। পরে তিনি নদের পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শঙ্খ নদের বার্মা কলোনি ঘাট এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরির দল চেষ্টা চালিয়েও তাঁর লাশ খুঁজে পায়নি। তবে গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বার্মা কলোনি ঘাট এলাকাতেই ছাবেরের লাশ নদের পানিতে ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন।

ছাবের আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী রৌশন আরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ও মামলা ছিল না। অথচ পুলিশ এসে আমার স্বামীকে গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজতে থাকেন। পরে তিনি পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শঙ্খ নদে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচার চেষ্টা করতে গিয়েই নিখোঁজ হয়েছেন।’ তাঁর দাবি, পুলিশের কারণেই ছাবের নদের পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

পুলিশের দাবি, ছাবের আহমদসহ অনেকেই বার্মা কলোনি ও আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসা, চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। ছাবেরের বিরুদ্ধে মাদক ও চুরির ঘটনায় দুটি মামলা আছে। তবে রোববার রাতে দোহাজারীর বার্মা কলোনি এলাকায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারের জন্য যায়নি। ওই সময় এলাকায় পুলিশের একটি দল নিয়মিত টহলে ছিল মাত্র। সম্ভবত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্ত হিসেবেই ছাবের পুলিশের উপস্থিতি দেখে পালানোর জন্য নদের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন।

দোহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি পুলিশের তাড়া খেয়ে ছাবের নদের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আর উঠতে পারেননি।’

চন্দনাইশের দোহাজারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ছাবেরের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও ওই দিন পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারের জন্য সেখানে যায়নি। তা ছাড়া পুলিশ কাউকে ধাওয়াও করেনি। ছাবের হয়তো পুলিশের টহল দল দেখে ভয়ে পালানোর জন্য পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আর উঠতে না পেরে মারা গেছেন।

মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ছাবেরের লাশ নদের পানিতে ভেসে উঠে। পরে স্থানীয় লোকজন লাশটি উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।